রাজশাহীর ১৪ স্পটে মিলেছে এডিস মশার লার্ভা
রাজশাহী মহানগরীর ১৪টি স্পটে ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। নগরীর ১০০টি স্পট পর্যবেক্ষণ করে এডিসের লার্ভা পেয়েছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গঠিত কীটতত্ত্ব সেল।
রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ডেঙ্গু জ্বর মোকাবিলায় রাজশাহী সিটি করপোশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে কীটতাত্ত্বিক জরিপ কাজে এডিস মশার বিস্তৃতি, ঘনত্ব প্রজনন স্থান নির্ণয়ের বিষয় উল্লেখ করে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট বুধবার বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশিষ্ট দপ্তরগুলোতে পাঠনো হয়েছে।
এদিকে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেছেন, ‘বুধবার দুপুর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় এ হাসপাতালে ৩৩ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। এর আগের দিন একই সময়ে ভর্তি হয়েছিলেন ১৬ জন। চলতি মৌসুমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২২২ জন ভর্তি হয়েছিল। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে ১৩৪ জন। বর্তমানে এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৮৮ জন ডেঙ্গু রোগী।’
ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য বলেন, ‘রাজশাহীতে এডিস মশার উপস্থিতি আছে কী নেই, তা নিশ্চিত হতে গত ১ আগস্ট তিনি নিজ উদ্যোগে স্থানীয় কীটতত্ত্ববিদদের নিয়ে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন। রাজশাহী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা কীটতত্ত্ববিদ তায়েজুল ইসলামকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অপর দুই সদস্য ছিলেন- রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ের কীটতত্ত্বীয় টেকনিশিয়ান আব্দুল বারী এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্বীয় টেকনিশিয়ান উম্মে হাবিবা। তিন সদস্যের একটি কমিটি গত ২ থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত পাঁচ দিন ধরে রাজশাহীতে এডিস মশার উপস্থিতি নিয়ে মাঠে কাজ করেছেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আশপাশসহ নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডেও ১০০টি স্পট থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন তারা। এ সময় তারা ১৪টি স্পটে এডিস মশার লার্ভার ব্যাপক উপস্থিতি দেখতে পান। এসব স্পট থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তারা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ের হ্যাচারিতে নিয়ে যান। সেখানে বর্তমানে তাদের বংশ বিস্তারের প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।’
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের বাসভবনের সামনে থেকে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ার ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী জানান, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের বাসভবনটি বসবাসের অযোগ্য হওয়ায় প্রায় ১০ বছর ধরে পরিত্যক্ত। ওই বাসায় তিনি থাকেন না।
নগরীতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফ এ এম আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘বাংলাদেশে যখন এডিস মশা আছে, তখন রাজশাহীতেও থাকতে পারে। তবে সেই মশা ডেঙ্গু আক্রান্ত কি না, অর্থাৎ মশাটি ডেঙ্গুর জীবাণু বহন করছে কি না, সেটাই কথা। তবে নগরীর মশা ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও তা পরীক্ষার ব্যবস্থা এখানে নেই। সে জন্য বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের গঠন করা কীটতত্ত্ববিদদের কমিটি মাঠপর্যায়ে নমুনা সংগ্রহ করে যে তথ্য পেয়েছে, তাদের সেই প্রতিবেদন আমরা বিকেলে হাতে পেয়েছি। সিটি মেয়রকে সেই প্রতিবেদন তাৎক্ষণিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিটি করপোরেশন থেকে এডিস মশার প্রজননক্ষেত্রগুলো জরুভিত্তিতে ধ্বংস করা হবে।’