ভিড় বাড়ার আগেই রাজধানীতে ফিরছেন কর্মজীবীরা
পবিত্র ঈদুল আজহা ও জাতীয় শোক দিবসের ছুটি কাটিয়ে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। গ্রামফেরত মানুষের কোলাহলে মুখর হয়ে উঠেছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল। তবে এখনও পুরুদমে আসা শুরু হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, কাল থেকে রাজধানীতে ফেরার ঢল নামবে।
আজ শুক্রবার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো থেকে নেমে আসছেন মানুষ। বাস থেকেই নেমেই সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা বা বাসে করে যাচ্ছেন নিজ নিজ ঠিকানায়।
চাঁদপুর থেকে পদ্মা বাসে করে এসেছেন আবদুল হালিম। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি করেন তিনি। এনটিভি অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘আগামীকাল শনিবার থেকেই আমার অফিসে যোগ দিতে হবে। তাই আজই স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে চলে আসলাম। রোববার থেকে বাচ্চাদের স্কুল খুলবে। তাই ভিড় বাড়ার আগেই চলে এসেছি।’
যাতায়াত কেমন হয়েছে জানতে চাইলে আবদুল হালিম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এবার ঈদে যাতায়াতে মানুষ অনেক বেশি সময় পেয়েছে। সাধারণত অন্যান্য বছর ঈদে তিন দিন ছুটি পাওয়া যায়। এবার প্রায় ৯/১০ দিন ছুটি পেয়েছি। গত বৃহস্পতিবার অফিস শেষে ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে। ঈদের ছুটি শেষ হয়েছে মঙ্গলবার। বৃহস্পতিবার জাতীয় শোক দিবসের ছুটি ছিল। মাঝখানে বুধবার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছুটি নিয়েছি। ফলে বাড়িতে যাওয়া-আসার বিষয়ে খুব তাড়াহুড়া করতে হয়নি। পরিবার-পরিজন নিয়ে এবার বেশ ভালোভাবেই ছুটি ভোগ করতে পেরেছি।’
হবিগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে বাস থেকে নেমেছেন আবদুল মুয়ীদ। একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন তিনি। এনটিভি অনলাইনকে আবদুল মুয়ীদ বলেন, ‘আমার অফিস শুরু হবে আগামী রোববার থেকে। আগামীকাল থেকে বড় ছেলের কোচিং শুরু হবে। তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে আজই চলে আসলাম। তা ছাড়া আগামীকাল হয়তো ভিড় একটু বেশি হবে। এ কারণে একদিন আগেই চলে আসলাম।’
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ট্রেন থামার সঙ্গে সঙ্গে নামছেন মানুষ। টানা ৯/১০ দিন ছুটি কাটিয়ে আবার সেই চিরচেনা জায়গায় পা দিয়েই অনেকের মুখে তৃপ্তির হাসি।
মা-বাবার সঙ্গে ঈদ করে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নেমেছেন লোকমান হোসেন। একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন। এনটিভি অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘টানা আট দিন মা-বাবার সঙ্গে ছিলাম। ঢাকায় আসার পর থেকে এত দিন মা-বাবার সঙ্গে থাকার সুযোগ হয়নি। তাই এবার বেশ ভালোই লাগছে।’
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও লঞ্চগুলোতে করে বেশ মানুষ আসছে। তবে ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, আজ রাত ও কাল সকাল থেকে মানুষের ভিড় আরো বাড়বে।
এদিকে ঢাকার রাস্তায় এখনো রয়েছে ছুটির আমেজ। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ২০ মিনিটে ফার্মগেট চলে আসছে টাউন সার্ভিস বাস। কোথাও কোনো যানজট নেই। খাবার হোটেল ও ওষুধের দোকান ছাড়া অন্যান্য দোকানপাট এবং মার্কেটগুলো এখনো তেমন একটা খোলেনি। দু-একটি খুললেও ক্রেতাদের আনাগোনা একেবারেই হাতেগোনা।