বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেছেন, ‘দেশে বিচার বলতে কিছু নেই। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা জামিনযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁর জামিন হচ্ছে না। কারণ বিচার বিভাগ আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে বন্দি। বিচারকদের রায় দেওয়ার বা জামিন দেওয়ার কোনো স্বাধীনতা নেই।’

আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন সেলিমা রহমান। জাতীয়তাবাদী মহিলা দল ওই মানববন্ধনের আয়োজন করে। 

সেলিমা রহমান বলেন, ‘বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী আদালতের দরজায় দৌড়াচ্ছে অথচ তাঁদের মিথ্যা মামলায় জামিন না দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। এমন অবস্থায় আমাদের কী করতে হবে? আমাদের একটি কথা মনে রাখতে হবে, খালেদা জিয়া বলেছিলেন, তোমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন কর। যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশের জনগণ জাগরিত হয়।’

পত্রিকার পাতা খুললে ভালো সংবাদ পান না জানিয়ে সেলিমা রহমান বলেন, ‘আজকে আমরা পত্রিকার পাতা খুললেই দেখতে পাই, চামড়ার দামে ধস নেমেছে। রড দিয়ে হামলা চলছে। খুন-গুম-হত্যা চলছে। শিশু-নারী হত্যা চলছেই। মানুষ কথা বলার সাহস পাচ্ছে না, কারণ তারা জানে যদি তারা কথা বলে তাহলে তাদের উপর সন্ত্রাসী বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়বে। নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য তারা গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে জোর করে কারাগারে আটক করে রেখেছে। শুধু তাই নয় তারা জনগণের ওপর অত্যাচারের স্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছে। তারা জনগণকে কথা বলতে দিচ্ছে না। বিশেষ করে নারী ও শিশুর অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। জাতীয়ভাবে আমাদের শুধু নারী ও শিশু নির্যাতন দিবস পালন করলে চলবে না। আমাদের  নারী সমাজকে রাজপথে নেমে আসতে হবে।’

বিএনপির এ নেত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা অপেক্ষা করছে কখন রাজপথে নামবে, কখন এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। তারা সাহস পাচ্ছে না কারণ তাদের সন্তানকে, তাদের কন্যা সন্তানকে, তাদের কিশোরী সন্তানকে, তাদের শিশু সন্তানকে রাজপথে নামলেই আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী কিংবা প্রশাসনের সন্ত্রাসী বাহিনী ধর্ষণ করবে না হয় হত্যা করবে।’

আজকে একের পর এক ধর্ষণ চলছে বলে জানান সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, ‘এই তো দুদিন আগে আমরা দেখলাম ট্রেনের বগির মধ্যে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। মাদারীপুরে আমরা দেখেছি, নৌকা থেকে নামিয়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয়েছে।’

মিন্নির প্রসঙ্গ এনে সেলিমা বলেন, ‘যে মিন্নি স্বামীকে বাঁচানোর জন্য সন্ত্রাসী বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল সেই মিন্নিকে অন্যায়ভাবে আটক করে,পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে, তাঁর মিথ্যা জবানবন্দি আদায় করা হয়েছে। ক্ষমতায় থেকে যারা এই সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করেছে তাদের যাতে কোনো দোষ দিতে না হয় সেজন্য তারা নয়ন বন্ডকে ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে।’

ডেঙ্গু মহামারির আকার ধারণ করেছে বলে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এক এমপি নিজেই বলেছেন। ডেঙ্গু আমাদের ওপর গজব হিসেবে নেমেছে, নমরুদের গজব।’

সেলিমা রহমান আরো বলেন, ‘আমাদের একটি লক্ষ্য আন্দোলনের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা। কারণ খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে গণতন্ত্রের মুক্তি, খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই স্বাধীনতার মুক্তি। তাই আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আপোসহীন নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনব ইনশা আল্লাহ।’

মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চলনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন, মহিলা দলের সাবেক সভানেত্রী নূরে আরা সাফা, মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।