বালিশকে হার মানিয়েছে পর্দা : মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘৬ হাজার টাকায় একেকটি বালিশের কেনার দুর্নীতিকে হার মানিয়েছে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের পর্দা কেনার দুর্নীতি।’
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র ও শহীদ জিয়ার অবদান’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘এটা একটা অস্বাভাবিক সরকার। সব কিছু অস্বাভাবিক ভাবে চলছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বালিশ ক্রয় করা ও তুলতে কত টাকা লাগে সেটা দেখলাম। এখন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের পর্দা কেনার দুর্নীতি, এটাকেও হার মানিয়েছে। এক সেট পর্দা কিনতে নাকি ৩৭ লাখ টাকার ওপরে। কেন? কারণ সরকারের কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই। সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিত ভাবে ব্যাংকের মাধ্যমে লুট করছে। ব্যাংক লুট হচ্ছে কোনো বিচার নাই, রিজার্ভ লুট হচ্ছে কোনো বিচার নাই।’
মোশাররফ বলেন, ‘বর্তমানে ঋণ খেলাপিদের আরো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এখন যারা বালিশ আর পর্দা কেনার দায়িত্বে তারা বড় কর্মকর্তা, তারা মনে করছে- গত ১০ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা সুইচ ব্যাংকে পাচার হয়েছে। তো আমরা কিছু করি না কেন? তো তারা এই বালিশ আর পর্দা কেনার জন্য করছে। এটা জাতি ও দেশের জন্য অত্যন্ত অশনিসংকেত।’ তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত ঠেকেছে। এই সমাজে আজকে পচন লেগেছে। এই দুর্নীতি আমরা দেখছি দেশে গণতন্ত্র নেই বলে। যদি সরকার জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হতো তাহলে তাদের দায়বদ্ধতা থাকত। যেহেতু এই দায়বদ্ধতা নাই, যে যা ইচ্ছে তাই করছে।’
বিএনপির শীর্ষ এ নেতা বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন- বিএনপি নাকি ভোটের রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি ডিসেম্বরের ২৯ তারিখ রাতে আওয়ামী লীগ সারা জীবনের জন্য ভোটের রাজনীতি থেকে বিদায় হয়ে গেছে। জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার আর মুখ নেই। তারা নিজেরা বিদায় হয়ে গেছে। এটাও ইতিহাসে সত্য, যা মোছা যাবে না।’
সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল গণতন্ত্র। দেশ স্বাধীনের সোয়া তিন বছরের মাথায় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে সেই গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর শহীদ জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার দিয়ে, বাংলাদেশে যারা রাজনীতি করতে চায় সেই সব দলের নিবন্ধনের আহ্বান জানান তিনি। এরপর নতুন করে নিবন্ধন নিয়ে এই আওয়ামী লীগ রাজনীতি শুরু করে। এই ইতিহাস আওয়ামী লীগ মুছবে কীভাবে? কীভাবে তারা অস্বীকার করে? আওয়ামী লীগ যেখানে ব্যর্থ বিএনপি সেখানে সফল। এজন্য তারা শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়ার নাম মুছে দিতে চায়।’
আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।