ভাই, আমার ইজ্জতটা রাইখেন
আটকের আগে নিজের ইজ্জত নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলেন যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম। ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের উদ্দেশে শামীম বারবার বলেন, ‘ভাই, আমার ইজ্জতটা খাইয়েন না। আমার একটা ইজ্জত আছে। ছবি তুললে আমার ইজ্জতটা আর থাকবে না।’
এভাবেই বারবার সাংবাদিকদের ছবি তুলতে নিষেধ করেন শামীম। যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের রাজধানীর নিকেতনের বাড়িতে আজ শুক্রবার সকাল ৬টার পরই ঘেরাও রাখে র্যাব। সিটি করপোরেশনের লোক পরিচয় দিয়ে র্যাব সদস্যরা তাঁর নিকেতনের ৫ নম্বর সড়কের ১৪৪ নম্বর বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় তিনি তাঁর সশস্ত্র দেহরক্ষীদের নিয়ে কার্যালয়েই অবস্থান করছিলেন বলে জানান অভিযান পরিচালনাকারী র্যাব সদস্যরা।
দুপুরের পর বিষয়টি জানতে পারেন সাংবাদিকরা। তখনই হুড়মুড় করে নিকেতনের দিকে যান বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। দুপুর ২টার দিকে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির গ্যারেজে নামীদামি বেশ কয়েকটি গাড়ি। তাঁকে প্রটোকল দেওয়ার জন্য রয়েছে কোরিয়ার তৈরি আড়াইশ সিসির দুটি মোটরসাইকেলও।
র্যাব সদস্যরা তাঁর কার্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় রাখা নগদ বিপুল পরিমাণ টাকা, অস্ত্র, ডলার ও বিপুল পরিমাণ মদ জব্দ করেন। এ সময় সাংবাদিকরা ক্যামেরা নিয়ে তাঁর ছবি তুলতে গেলে তিনি বাধা দেন। তিনি অনুনয়-বিনয় করে ছবি তুলতে নিষেধ করেন।
শামীম বলেন, ‘আমারও তো কিছু কথা আছে। আমাকে এভাবে সমাজে ছোট কইরেন না। আমার ইজ্জতটা নষ্ট কইরেন না ভাই।’
আজ শুক্রবার দুপুরে শামীমকে তাঁর রাজধানীর নিকেতনের বাড়িতে অবস্থিত নিজ কার্যালয় থেকে আটক করে র্যাব। এর আগে তাঁর কার্যালয় ঘিরে রেখে অভিযান চালান র্যাব সদস্যরা।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া এনটিভি অনলাইনকে জানান, নিকেতনের ৫ রোডের ১৪৪ নম্বর বাসায় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালায় র্যাব।
শামীম তাঁর দেহরক্ষীদের নিয়ে কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন। এর আগে গত বুধবার যুবলীগের আরেক প্রভাবশালী নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। বর্তমানে খালেদ ডিবি হেফাজতে রিমান্ডে রয়েছেন।
দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অপকর্মের দায়ে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ হারানো পর প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের কয়েকজন নেতার দুর্নীতির বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের ভেতরেও শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার ইঙ্গিত দেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব যুবলীগের কয়েকজন নেতার কার্যালয় ও বাসভবনে অভিযান পরিচালনা করছে।
যুবলীগ নেতা শামীমের বিরুদ্ধে রাজধানীতে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিযান পরিচালনাকারী র্যাবের এক কর্মকর্তা।