আবরার নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ‘একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে, সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে’
বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের মন্তব্যকে ‘অহেতুক’ বলে মনে করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
আজ মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, ‘একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই সরকার তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। আমি মনে করি তারা (কূটনীতিকরা) শিষ্টাচার লঙ্ঘন করেছেন।’ বার্তা সংস্থা ইউএনবি ওই তথ্য দিয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীর গুলিতে চারজন নিহতের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এ ঘটনায় মার্কিন সরকার কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। কিন্তু তারা (কূটনীতিক) সেখানে এ জাতীয় বিবৃতি দিচ্ছেন না। অথচ এখানে (বাংলাদেশে) আবরার হত্যাকাণ্ডের প্রথম দিন থেকেই সরকার বলেছে যে অপরাধীদের (আবরার হত্যার সঙ্গে জড়িত) সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে।’
গত ৬ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে (২১) তার আবাসিক হলে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। এ ঘটনায় তার বাবা ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলায় এ পর্যন্ত ১৬ জন এজাহারভুক্ত আসামিসহ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্কুলশিক্ষার্থী নিহতের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এখানে (বাংলাদেশে) দোষ চাপানোর একটা প্রবণতা রয়েছে। আমি মনে করি তাদের (কূটনীতিকদের) এটি বন্ধ করা উচিত।’
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যার বিষয়ে জাতিসংঘ বিবৃতি দেওয়ায় গত রোববার বাংলাদেশ অসন্তোষ প্রকাশ করে। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পোকে রোববারই ডেকে ব্যাখ্যা জানতে চায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ দূত মিয়া সেপ্পো বলেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা একটি মৌলিক অধিকার। এর চর্চার জন্য কাউকে হয়রানি, নির্যাতন ও হত্যা করা উচিত নয়। নিজের মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশের দায়ে এক তরুণ বুয়েট শিক্ষার্থীর খুন হওয়ার ঘটনায় তারা শোকাহত।’
ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পোকে গত রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জাতিসংঘ উইং) নাহিদা সোবহানের কার্যালয়ে তলব করা হয় এবং সেখানে আবরার হত্যার বিষয়ে সরকারের অবস্থান এবং ঘটনার পরই নেওয়া ‘তড়িৎ ব্যবস্থা’ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় বলে কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে।
এ ছাড়া ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্র আর্ল আর মিলার ও ব্রিটিশ হাইকমিশনারও আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে মন্তব্য করেন।
গত বৃহস্পতিবার তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আবরার হত্যা নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের বিবৃতি দেওয়া অযাচিত। এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’