বান্দরবানে পূজার চাঁদা নিয়ে হামলা, পরে সংঘর্ষ
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় দুর্গাপূজার জন্য ধার্য করা চাঁদার টাকা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে চারজন আহত হয়েছে। পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার রাত ১১টার সময় বিজয় ধর ও বিধান ধর দুই ভাই মোটরসাইকেলে করে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এ সময় বাইশারী বাজারে তাদের বাইকের পথ আটকে দেন দক্ষিণ বাইশারী হরি মন্দির কমিটির সভাপতি সাধন ধর ও সাধারণ সম্পাদক সুমন চৌধুরী বটন। পরে তাঁদের বাইক থেকে নামিয়ে শার্টের কলার ধরে মন্দিরের অফিসে টেনে নিয়ে যান। এ সময় মন্দির কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচ-সাতজন দুই ভাইকে মারধর করেন। একপর্যায়ে লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় চারজন আহত হয়।
আহত ব্যক্তিরা হলেন বিজয় ধর (৪২), বিধান ধর (৩০), সজল ধর (৪৫) ও রাজধন কর্মকার (৩০)। এদের মধ্যে বিজয় ধরের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) মাইনুদ্দিন ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করে। আটক ব্যক্তিরা হলেন দক্ষিণ বাইশারী হরি মন্দিরের পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাধন ধর (৫২), সাধারণ সম্পাদক সুমন চৌধুরী বটন (৪০), দক্ষিণ বাইশারী গ্রামের মিটন দে (২৮), সুজন দে (৩৫) ও রাজধন কর্মকার (৩৪)।
আহত বিধান ধর বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদার জন্য মন্দির কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাঁদের চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু এক হাজার টাকা দিতে চাওয়ায় মন্দির কর্তৃপক্ষ ক্ষেপে যায় এবং পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। পূজা শেষ হলে মন্দির কর্তৃপক্ষ অন্য লোকজন নিয়ে তাদের মারধরের জন্য কয়েক দফা বৈঠকও করে। ওই ঘটনায় পাঁচজনসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান আহত বিধান ধর।
আটক মন্দির কমিটির সভাপতি সাধন ধর বলেন, ‘ধার্যকৃত চাঁদার টাকা না দেওয়ার ঘটনাটি সত্য। তবে আমরা কেউ এ রকম ঘটনা ঘটাইতে চাইনি। বিজয় ধর ও বিধান ধরই আমাদের ওপর প্রথম হামলা করে। ফলে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।’
বাইশারী পুলিশের তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মাইনুদ্দিন বলেন, আটক পাঁচজন হাজতখানায় রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আলম বলেন, তিনি ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে ইউপি সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। তিনি উভয়পক্ষকে ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে নিষ্পত্তির পরামর্শ দেন। তবে বিজয় ধরের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় হামলার শিকার পরিবার তা মানতে রাজি হয়নি।