ভোলার এসপি ও বোরহানউদ্দিনের ওসির অপসারণের দাবি
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/10/21/photo-1571657806.jpg)
সভা, সমাবেশ নিষিদ্ধের মধ্যেও সংবাদ সম্মেলন, অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঐক্য পরিষদসহ সর্বস্তরের জনগণ। সাংবাদিক সম্মেলন করে পুলিশ সুপার ও ওসির অপসারণ, ছয় দফা দাবি এবং ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম না মানলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার বেলা ১১টায় ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদ নামের একটি সংগঠন।
সংগঠনের নেতা মাওলানা মিজানুর রহমান লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় তিনি ভোলার পুলিশ সুপার (এসপি) ও বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) অপসারণসহ ছয় দফা দাবি জানান। তুলে ধরেন ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটামের কথা। দাবি না মানা হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন। এ ছাড়া সংগঠনের আহ্বায়ক মাওলানা মো. বশির আহমেদ তিন দিনের কর্মসূচি তুলে ধরেন।
অপরদিকে ছয় দফা দাবি মানা না হলে হরতাল দেওয়ার কথা বলেন সংগঠনের অপর এক সদস্য মাওলানা আতাউর রহমান।
ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে অনেক ঘটনা ঘটে। তবে কোনো গণ্ডগোল হয়নি। আল্লাহ ও রাসুলকে নিয়ে কটূক্তি করায় জনগণ ফুসে উঠেছে উল্লেখ করে যারাই এর সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
অপরদিকে পৃথক দুটি মামলার ঘটনা উল্লেখ করে পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের উপপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এসব ঘটনায় একাধিক তদন্ত টিম কাজ করছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ছাড়া পুলিশ সুপার, ওসির অপসারণসহ ছয় দফা দাবির বিষয়ে বলেন, ‘এজন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ আছে তারা দেখবেন এবং ব্যবস্থা নিবেন।’
এদিকে আজ সকাল থেকেই র্যাব, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা পুরো শহরে সতর্ক অবস্থান নিয়ে রয়েছে। টহল দিচ্ছে সর্বত্র। এ ছাড়া পূর্বঘোষিত সমাবেশস্থলকে ঘিরে রেখেছে বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের সভা ও সমাবেশকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক। কিন্তু এর মধ্যেও উত্তেজিত জনতা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে আসে।
অপরদিকে, ভোলার বোরহানউদ্দিনে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতদের জানাজা রাতেই দাফন করা হয়েছে। এদিকে আজকের ডাকা কর্মসূচি যাতে বাস্তবায়ন করতে না পারে তার সব প্রস্ততি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ভোলার প্রতিটি রাস্তার মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছে। সর্বত্র থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
রোববারের ঘটনায় নিহত চারজনের মধ্যে হাফেজ মো. মাহফুজুর রহমান পাটোয়ারীর জানাজা গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় বোরহানউদ্দিন উত্তরমাথা বাসস্ট্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে অন্য নিহতদের যার যার গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে। তবে রাতেই হাসপাতাল ছেড়ে আতংকিত আহত রোগীরা বাড়িতে চলে গেছে।
এদিকে ভোলা সদরের সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদ ব্যানারে মুসল্লিদের সমাবেশ করার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি বলে জানান ইমান আক্বিদা সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তাজউদ্দিন ফারুকী। এ ছাড়া শহরজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবস্থান নিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
এদিকে ভোলা বাস মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, নিরাপত্তার কারণে ভোলা জেলার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন বলেন, ‘কোনো ধরনের সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।’
র্যাবে কর্মরত অতিরিক্ত ডিআইজি আতিক ইসলাম জানান, র্যাবের ১২টি টিম ভোলা সদর ও বোরহানউদ্দিনে কাজ করছে।