এবার ভোলার পুলিশ সুপারের ফেসবুক আইডি হ্যাক
বোরহানউদ্দিন উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে মুসল্লিদের দফায় দফায় সংঘর্ষে চারজন নিহতের ঘটনায় উত্তেজনার মধ্যেই ভোলার পুলিশ সুপারের (এসপি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের আইডি হ্যাক করার অভিযোগ উঠেছে।
এসপি সরকার মোহাম্মদ কায়সার আজ মঙ্গলবার সকালে এ ব্যাপারে সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আইডিটি হ্যাক হয়েছে। ধারণা করছি, রাতের কোনো একসময় হয়তো এমনটা হয়েছে। তাই থানায় জিডি করেছি।’
সদর মডেল থানায় যোগাযোগ করা হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘পুলিশ সুপার যে জিডি করেছেন, সেটির নম্বর ৯৯৩।’
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ১৮ অক্টোবর বোরহানউদ্দিনে বিপ্লব চন্দ্র শুভ নামের এক ব্যক্তির ফেসবুক আইডি হ্যাক করে মেসেঞ্জারে ধর্মীয় অবমাননাকর বক্তব্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত রোববার সকালে ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে মুসল্লিরা বিপ্লবের ফাঁসির দাবিতে ঈদগাহ মাদ্রাসার মাঠে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। পুলিশ এই সমাবেশের অনুমতি দেয়নি এবং জনতাকে অনুরোধ করে সমাবেশ না করার জন্য। তারপর হাজারো জনতা সেখানে জড়ো হয়। এবং সেখানে উত্তেজিত মুসল্লিরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। আক্রমণকারীদের গুলিতে পুলিশের দুই সদস্য আহত হন।
পুলিশ আরো দাবি করে, একপর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে ও সরকারি জানমাল রক্ষার্থে ও উত্তেজিত লোকজনকে নিবৃত্ত করতে প্রথমে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে এবং পরে শটগান চালায় পুলিশ। পরে পরিস্থিতির ভয়াবহতায় ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে একপর্যায়ে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়। এ সময় মাহফুজ পাটওয়ারী, মিজান, শাহিন, মাহবুব নামে চারজন মুসল্লি নিহত হন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে করে ‘সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে একটি সংগঠন তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর অংশ হিসেবে আজ বিকেলে জেলা শহরে কালো পতাকা মিছিল হওয়ার কথা।
যদিও জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, ‘কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না। সবার আগে হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। যেকোনো মূল্যেই হোক সভা-সমাবেশ করতে দেব না।’
এদিকে শহরজুড়ে টহল দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শহরের মোড়ে মোড়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), কোস্টগার্ড ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।