ভোলায় বাস-লঞ্চ যোগাযোগ বন্ধ, পরিস্থিতি আজও থমথমে
ভোলার বোরহানউদ্দিনে ফেসবুকে কটূক্তি প্রচারের প্রতিবাদে মুসল্লিদের বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে চারজন নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলার অভ্যন্তরীণ সব রুটের বাস ও ভোলা-বরিশাল লঞ্চ সার্ভিস বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তৎপর থাকতে দেখা গেছে।
এ ঘটনায় সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের ব্যানারে জেলা পুলিশ সুপার ও বোরহানউদ্দিন থানার ওসির অপসারণসহ ছয় দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন স্থানীয় মুসল্লিরা। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার ভোলা সরকারি স্কুলমাঠে নিহতদের স্মরণে দোয়া-মোনাজাত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি মেলেনি।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় দোয়া-মোনাজাতের অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম ছিদ্দিক। শহরজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক জানান, পুলিশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এ ছাড়া ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসার প্রয়োজনে জেলা সদরে আসা শত শত রোগী ও তাঁদের স্বজনরা।
এদিকে জেলার প্রায় প্রতিটি মাদ্রাসার সামনে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না জনসাধারণকে। সব মিলিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে ভোলায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ১৮ অক্টোবর বোরহানউদ্দিনে বিপ্লব চন্দ্র শুভ নামের এক ব্যক্তির ফেসবুক আইডি হ্যাক করে মেসেঞ্জারে ধর্মীয় অবমাননাকর বক্তব্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত রোববার সকালে ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে মুসল্লিরা বিপ্লবের ফাঁসির দাবিতে ঈদগাহ মাদ্রাসার মাঠে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। পুলিশ এই সমাবেশের অনুমতি দেয়নি এবং জনতাকে অনুরোধ করে সমাবেশ না করার জন্য। তারপর হাজারো জনতা সেখানে জড়ো হয়। এবং সেখানে উত্তেজিত মুসল্লিরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। আক্রমণকারীদের গুলিতে পুলিশের দুই সদস্য আহত হন।
পুলিশ আরো দাবি করে, একপর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে ও সরকারি জানমাল রক্ষার্থে ও উত্তেজিত লোকজনকে নিবৃত্ত করতে প্রথমে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে এবং পরে শটগান চালায় পুলিশ। পরে পরিস্থিতির ভয়াবহতায় ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে গুলি চালাতে বাধ্য হয় পুলিশ। এ সময় মাহফুজ পাটওয়ারী, মিজান, শাহিন ও মাহবুব নামের চারজন মুসল্লি নিহত হন।