ভাষাসৈনিক আব্দুর রেজ্জাক আর নেই
শেরপুর জেলার প্রথম সংবাদপত্র সাপ্তাহিক শেরপুর পত্রিকার সম্পাদক ও শেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ভাষাসৈনিক আব্দুর রেজ্জাক ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার বিকেলে শেরপুর শহরে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন।
আব্দুর রেজ্জাকের বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি একমাত্র ছেলে শেরপুর জেলার বিশিষ্ট সাংবাদিক এনটিভির জেলা প্রতিনিধি কাকন রেজা, নাতিসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
কবি, সাংবাদিক, উপন্যাসিক ও রাজনীতিক মরহুম আব্দুর রেজ্জাকের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন রয়েছে। ১৯৭৯ সালে দৈনিক কৃষাণ পত্রিকার মাধ্যমে তাঁর সাংবাদিকতায় যাত্রা শুরু। ১৯৮৬ সালে শেরপুর জেলার প্রথম সংবাদপত্র সাপ্তাহিক শেরপুর প্রকাশ করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একাধারে কবি, সাংবাদিক ও রাজনীতিক আব্দুর রেজ্জাকের ‘চলার পথে’, ‘বড় একা একা লাগে’ ও ‘শেষ দেখা’ এবং ‘আমাকে বলতে দাও’ ও ‘প্রতিদিনের শব্দ’ নামে দুটি কাব্যগ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছে।
১৯৫৪ সালে শেরপুর জিকেপিএম স্কুল থেকে ম্যাট্টিকুলেশন পাস করেন আব্দুর রেজ্জাক। পরে ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ, জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজ এবং শেরপুর সরকারি কলেজে অধ্যয়ন করেন। স্কুলের ছাত্র থাকাবস্থায় তিনি ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। এ ছাড়া ঊনসত্তুরের গণঅভ্যুত্থান ও স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি।২০০৫ সালে ভাষাসৈনিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত হন তিনি।
আব্দুর রেজ্জাকের মৃত্যুতে শেরপুরের রাজনীতি, সাংবাদিক এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে শেরপুর প্রেসক্লাব, শেরপুর সাংবাদিক কল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠন।
মঙ্গলবার রাত ৮টায় শেরপুর শহরের তেরা বাজারে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে প্রথম এবং রাত ১০টায় পাকুরিয়া খামারপাড়া গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাঁর লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।