বিএসএফের গুলি ও তাড়া খেয়ে নিহত ৩
সাতক্ষীরার তলুইগাছা সীমান্তের বিপরীতে ভারতের তারালিতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। একই সময়ে বিএসএফের তাড়া খেয়ে আরো এক বাংলাদেশি সোনাই নদীতে ডুবে মারা গেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে সীমান্তের প্রধান খুঁটির (মেইন পিলার) ১৩ নম্বর উপস্তম্ভের (সাবপিলার) কাছে ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে।
বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন সাতক্ষীরা সদরের পাঁচরকি গ্রামের মো. নজরুল ইসলাম (৩৫) ও কলারোয়ার কাকডাঙ্গা গ্রামের খালেক সরদার (৪০)। সোনাই নদীতে ডুবে মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মো. আনোয়ার হোসেন (৩৫)।
নিহতদের মরদেহ বসিরহাট থানা পুলিশ ভারতের বদরতলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। অন্যদিকে আনোয়ার হোসেনের লাশ বিজিবি কলারোয়া থানা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।
বিজিবির তলুইগাছা কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার হুমায়ুন কবির জানান, দুই বাংলাদেশি বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সীমান্তের চারাবাড়িতে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিজিবি বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি করে হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বিজিবি জানায়, পতাকা বৈঠকে বিএসএফ জানিয়েছে কয়েকজন বাংলাদেশি বৃহস্পতিবার ভোরে ভারতীয় গরু নিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। বিএসএফএর ৭৬ ব্যাটালিয়নের তারালি ক্যাম্প সদস্যরা তাঁদের চ্যালেঞ্জ করে। এতে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় বিএসএফের গুলিতে দুজন নিহত হন। বিজিবির আপত্তির মুখে বিএসএফ গুলি বর্ষণের ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবে বলেও জানিয়েছে বিএসএফ।
এদিকে গ্রামবাসী জানিয়েছেন, একই ঘটনায় বিএসএফের চ্যালেঞ্জের মুখে গরু পাচারকারীদের সঙ্গী আনোয়ার হোসেন দৌড়ে পালাতে গিয়ে সীমান্তের সোনাই নদীতে পড়ে যান। সেখানেই মারা যান তিনি। আনোয়ার হোসেন কলারোয়ার উত্তর ভাদিয়ালি গ্রামের বাসিন্দা। বিজিবির কাকডাঙ্গা বিওপির সুবেদার আবদুর রব বলেন ‘ আনোয়ার হোসেন সোনাই নদীর পানিতে ডুবে মারা গেছেন।’
বিজিবির ৩৮ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল আরমান বলেন ‘বিএসএফ কর্তৃক গুলি করে হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছি আমরা। এ নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।’ তিনি জানান, বিএসএফ আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে যত দ্রুত সম্ভব নজরুল ও খালেকের মরদেহ ফেরত দেবে বলে জানিয়েছে।
পতাকা বৈঠকে বিএসএফের ৭৬ ব্যাটালিয়ন কমান্ড্যান্ট রাজেশ কুমার ও ডেপুটি কমান্ডান্ট অনিল গুরুরিয়া এবং বিজিবির পক্ষে ৩৮ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল আরমান ও উপ-অধিনায়ক মেজর মোজাম্মেল হক উপস্থিত ছিলেন । বেলা ২টা থেকে ৩০ মিনিটের এ বৈঠকে বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করেছে বলে জানান বিজিবি অধিনায়ক।