ছাত্রলীগের র্যালিতে না যাওয়ায় সংস্কৃতিকর্মীকে মারধর
বিজয় দিবস উপলক্ষে ছাত্রলীগের র্যালিতে অংশ না নেওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিক শিমুল রাবির কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আর অভিযুক্ত ছাত্রলীগকর্মীরা হলেন অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী রাজ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের রাজ্জাক, ভাষা বিভাগের ইমরান, নাইম ও রুবেল। তাঁরা সবাই নবগঠিত মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানার কর্মী এবং হলের অনাবাসিক ছাত্র।
urgentPhoto
হল সূত্রে জানা যায়, বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে যাওয়ার জন্য মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগ একটি র্যালির আয়োজন করে। র্যালিতে অংশগ্রহণ বাড়াতে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানার সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগকর্মী মেহেদী রাজ, রাজ্জাক, ইমরান, নাইম ও রুবেলসহ কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মী হলের প্রতিটি রুমে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ডাকাডাকি করেন। এ সময় তাঁরা শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে র্যালিতে অংশ নিতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
মারধরের শিকার শিমুল বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী আমার রুমে এসে র্যালিতে যেতে বলে। একদিন পর আমার ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় আমি পড়াশোনা করছিলাম। আমি বিষয়টি তাদের বলি। তবু তাঁরা জোর করলে বলে দিই র্যালিতে যেতে পারব না।’
শিমুল আরো বলেন, ‘এ সময় ছাত্রলীগকর্মীরা চলে গেলেও পরে রাত পৌনে ১টার দিকে ছাত্রলীগকর্মী রাজ্জাক, মেহেদী, ইমরান, নাইমসহ কয়েকজন এসে আমাকে অশালীন ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। আমি প্রতিবাদ করলে রাজ্জাক নামের ছেলেটি আমাকে বেশ কয়েকটি চড় মারে। এ সময় তারা আমাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়।’
যোগাযোগ করা হলে ছাত্রলীগকর্মী মেহেদী রাজ বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘শিমুল ভাইয়ের দোষ ছিল। তিনি আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন।’
হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা বলেন, ‘মারামারির ঘটনা ঘটেনি। তবে র্যালিতে অনেক ডাকাডাকি করা হলেও শিমুল ভাই আসেননি। এ নিয়ে একটু রাগারাগি হয়েছে।’
ছাত্রলীগের র্যালিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোর করে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে মাসুদ রানা বলেন, ‘কাউকে জোর করা হয়নি, শুধু রুমে রুমে গিয়ে ডাকা হয়েছে।’
রাবির কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ‘সাংস্কৃতিক জোটের একজন নেতাকে মারধরের বিষয়টি ন্যক্কারজনক। আমরা অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীদের শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ওই হলের প্রভোস্টের কাছে লিখিত অভিযোগ দেব। দোষীদের শাস্তি দেওয়া না হলে পরবর্তী সময়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’