কুড়িগ্রামে বিলুপ্ত ছিটমহলে বিজয় উৎসব উদযাপন
উৎসব মুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে কুড়িগ্রামের সদ্যবিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে মহান বিজয় দিবস পালিত হচ্ছে। মুক্ত পরিবেশে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এবারই প্রথম বিজয় উৎসব পালন করছে এসব এলাকার বাসিন্দারা। ফলে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্রই।
দীর্ঘ ৬৮ বছর পর গত ৩১ জুলাই মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশের মূল ভুখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়। ৬৮ বছরের লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার পর বন্দী জীবন থেকে মুক্তি পাওয়া এ মানুষগুলো প্রথমবারের মতো বিজয় দিবস পালন করছে। উৎসবে মেতে আছে এসব এলাকার শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষ।
দাসিয়ার ছড়া, কালীরহাট বাজারসহ কুড়িগ্রামের অভ্যন্তরের ১২টি বিলুপ্ত ছিটমহলের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শোভাযাত্রা ও শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে দিবসের সূচনা করা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দিনভর চলছে খেলাধুলা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মুক্ত জীবনে বিজয় দিবস পালন করতে পেরে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়েছেন বিলুপ্ত ছিটের বাসিন্দারা।
বিলুপ্ত দাসিয়ার ছড়া ছিটের বাসিন্দা আয়েশা খাতুন জানান, নাগরিকত্ব লাভের দীর্ঘ আন্দোলনে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে ছিটমহলগুলোতে বিজয় দিবস পালন করলেও এবারে মুক্ত জীবনের বিজয় দিবস পালন করাটা আমাদের কাছে অন্যরকম আনন্দের।
বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি, বাংলাদেশ ইউনিটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বিজয়ের এই দিনে বাঙালি ও বাংলাদেশি হিসেবে বিজয় দিবস পালন করতে পেরে গর্বিত আমরা। দীর্ঘ ৬৮ বছরের দুঃখ-কষ্ট আমরা ভুলে গেছি। বাংলাদেশের সাথে মিলিত হয়ে বিজয় দিবস পালন করাটা সত্যিই আমাদের জন্য সৌভাগ্যের। দিনটি আমরা সব সাবেক ছিটবাসী আবেগঘন পরিবেশে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালন করছি।’