সরিষার ফলনে কৃষকদের মুখে হাসি

হিমেল বাতাসের সঙ্গে সরিষা ফুলের ম ম গন্ধ আর মৌমাছির গুঞ্জনের সঙ্গে কৃষকদের মুখে হাসি। এ যেন গ্রামবাংলার চিরন্তন দৃশ্য। সরিষার বাম্পার ফসলের আশায় শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার প্রায় ২০টি গ্রামের কৃষকের মুখে এবার হাসি ফুটেছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও এমনটিই আশা করছেন।
উপজেলার চতল, বনগাঁও, দিঘিরপাড়, হলদিবাটা, ভারুয়া, ফাকরাবাদ, কুচনীপাড়া, ঘাগড়া, বাঘেরভিটা, গুরুচরণ, দুধনই ও আহমদনগরের বিস্তীর্ণ এলাকা সরিষা ফুলের হলুদ চাদরে ঢেকে গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন ভালো হয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
দুধনই এলাকার কৃষক শফিউর আলম বলেন, ‘গতবার আবাদ করে অনেক ক্ষতি হয়েছে। এবার ২০০ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। ভয় ছিল গতবারের মতো এবারও ক্ষতিগ্রস্ত হই কি না। কিন্তু এবার ফলন দেখে আমি আশাবাদী। গতবারের ক্ষতি এবার পুষিয়ে নিতে পারব।’
একই এলাকার আরেক সরিষাচাষি গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ধানের আবাদের চেয়ে সরিষার ফলনে খরচ কম লাগে। পরিশ্রমও করতে হয় কম। তাই সরিষার আবাদ করেছি। সরিষার বাজার মূল্য এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০ হওয়ায় এবার লাভও হবে বেশি।’
এক সময় ঝিনাইগাতীর বিস্তীর্ণ অঞ্চল সরিষা আবাদের জন্য খ্যাত ছিল। এখানকার উৎপন্ন সরিষা কিনতে আসত বিভিন্ন এলাকার বেপারিরা। সরিষার তেল যেত জেলা ছাড়িয়ে জেলার বাইরে। কিন্তু সরিষার আবাদ কমে যাওয়ায় এসব মিল বন্ধ হয়ে যায়। এ পেশার সঙ্গে জড়িতরা বাধ্য হয়েই খুঁজে নেন অন্য পেশা। তবে এবারের সরিষার ফলন কৃষকদের মনে আবার সেই আশা জাগিয়ে তুলছে।
সদরের সাবেক মিলমালিক রহিম উদ্দিন বলেন, ‘ঝিনাইগাতীতে ব্যাপক সরিষার আবাদ হওয়ার কারণে বাপ-দাদার আমল থেকেই আমরা সরিষা ভাঙিয়ে তেল বাজারজাত করে আসছিলাম। কিন্তু আবাদ কমে যাওয়ায় আমরা পেশা বদলাতে বাধ্য হয়েছি।’ তবে এবার সরিষার ফলন দেখে আবার পুরোনো পেশায় ফিরে যাওয়ার আশা জাগছে বলে জানান রহিম উদ্দিন।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতীর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কোরবান আলী জানান, ‘সরিষার আবাদ এবার ভালো হয়েছে। সঠিক সময়ে চাষ ও সার ঠিকমতো দেওয়ার ফলে এমন ফলন হয়েছে। সরিষার চাষিরা এবার লাভবান হবে।’