পোড়াবস্তি উচ্ছেদের নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ দেননি চেম্বার আদালত

রাজধানীর কল্যাণপুরের পোড়াবস্তি উচ্ছেদের ওপর তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার ওপর কোনো স্থগিতাদেশ দেননি চেম্বার আদালত। একইসঙ্গে বিচারক এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ৩১ জানুয়ারি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে বিষয়টি শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।
আজ রোববার হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি শেষে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ আদেশ দেন।
আদালতে স্থগিত আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তাঁকে সহযোগিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল হক টুটুল।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল হক টুটুল জানান, আগামী ৩১ জানুয়ারি বিষয়টি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে।
এর আগে গত ২১ জানুয়ারি কল্যাণপুরের পোড়াবস্তি উচ্ছেদের ওপর তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
গৃহায়ণসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার ও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার সারা হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হাসানুজ্জামান।
আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, ‘আমরা শুনেছি, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকার পরও পোড়াবস্তিতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে এবং বস্তিবাসীকে হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি দৃষ্টিগোচর করানোর পর আদালত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা কার্যক্রমকে বেআইনি বলে উল্লেখ করেছেন এবং নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।’
আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে পোড়াবস্তিতে উচ্ছেদ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, কোয়ালিশন ফর আরবান পুওর এবং দুজন বস্তিবাসী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
একই বছরের ২৮ ডিসেম্বর আদালত কল্যাণপুরের পোড়াবস্তিতে স্থিতাবস্থা জারি করেন। পরে ২০০৬ সালে মামলার বাদী উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আরেকটি আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্ট। বিভিন্ন সময়ে এই স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
২০০৭ সালের ১৭ জানুয়ারি বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বস্তি নিয়ে মূল মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলে রায় দেন।
হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকার পরও পোড়াবস্তি উচ্ছেদ অভিযান শুরু করলে বিষয়টি নিয়ে আদালতে যান রিটকারীর আইনজীবীরা। শুনানি শেষে আদালত উচ্ছেদ কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।