কাজে যোগ দিয়েছেন সমাধানে সন্তুষ্ট চিকিৎসক-কর্মচারীরা
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মাফরোজা পারভীনের চিকিৎসা নিয়ে মামলা এবং চিকিৎসক-কর্মচারীদের কর্মবিরতি-সংক্রান্ত সংকটের অবসান হয়েছে। সন্তোষজনক সমাধানের পরে কাজে ফিরে গেছেন জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স-ব্রাদারসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মাফরোজা পারভীনকে চিকিৎসা প্রদানে অবহেলা ও তাঁর দুই কর্মচারীকে লাঞ্ছিতের অভিযোগে গতকাল হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মঈনসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এই আদেশ হাসপাতালে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে জরুরি বিভাগসহ সব সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেন চিকিৎসকসহ হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফলে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে গত সোমবার রাতে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালটিতে আসেন মাফরোজা পারভীন। সে সময় তাঁর জন্য বরাদ্দ হওয়া কক্ষ গুছিয়ে দিতে দেরি হওয়ায় হাসপাতালের একজন ব্রাদার ও চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করেন বিচারকের এক কর্মচারী ও দেহরক্ষী। এ ঘটনার জের ধরে ওই দিন দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন হাসপাতালটির চিকিৎসক-কর্মচারীরা। একই ঘটনার জন্য মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়।
পরে গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত প্রায় চার ঘণ্টা জেলার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে উভয় পক্ষের মধ্যে বিষয়টি মিটমাট করে দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আবু জাহির উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি সম্মানজনকভাবে শেষ হয়েছে। তিনি জানান, ডাক্তার-নার্সসহ কর্মচারীরা কাজে যোগদান করবেন এবং হাসপাতালে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে। তবে হাসপাতালে যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তাঁরা কাজে যোগদান করতে পারবেন কি না, তাঁদের গ্রেপ্তারের আশঙ্কা আছে কি না কিংবা মামলা প্রত্যাহার করা হবে কি না, সে বিষয়ে তিনি স্পষ্ট কোনো বক্তব্য দেননি।
হবিগঞ্জ সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আবু জহির ছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম, জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাবুল্লাহ, পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র, জেলা পরিষদ প্রশাসক ও বিএমএ সভাপতি ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরী, সিভিল সার্জন ডা. দেবপদ রায়, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও হাসপাতালের চিকিৎসকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এদিকে কর্মবিরতির কারণে চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকার সময় দুজন রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন বলে তাঁদের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন।