ভোলায় নির্বাচনী দ্বন্দ্বে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
ভোলা সদর উপজেলার চর সামাইয়া ইউনিয়নে নির্বাচনী দ্বন্দ্বের জেরে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ শুক্রবার ভোরে চর সামাইয়া ইউনিয়নের শান্তিরহাট এলাকার বাসিন্দা মো. সিরাজ উদ্দিন মারা যান। পরিবারের দাবি, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নির্বাচনী দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষ সিরাজকে ব্যাপক মারধর করে। এতে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চার সামাইয়া ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর শনি ও মো. বজলুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার দিনে ও রাতে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। হামলা-পাল্টা হামলায় ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সিরাজের স্ত্রী কমলা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থী ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর শনি ও তাঁর ছেলেরা আমার স্বামীকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর ব্যাপক মারধর করে। আগে থেকেই সেখানে সন্ত্রাসীরা অবস্থান নিয়েছিল। রাতে তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করেন এবং ভোরে মারা যান।’
সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থী মো. বজলুর রহমান বলেন, ‘মো. জাহাঙ্গীর শনি ও তাঁর ছেলেরা সিরাজকে ঘর থেকে টানা-হেঁচড়া করে বের করে নিয়ে মারধর করে। এতে সিরাজ অসুস্থ হয়ে পড়েন, ভোরে তিনি মারা যান।’
তবে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর শনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘এসব ঘটনা মিথ্যা। সকালে কিংবা রাতে কেউ এসব কথা বলেনি। আপনাদের (সাংবাদিক) দেখে নাটক সাজাচ্ছে।’
জাহাঙ্গীর শনি আরো বলেন, ‘তবে প্রচার চালানোর সময় আমার সমর্থক ও বজলুর সমর্থকদের মধ্যে ওই স্থানে তর্কবিতর্ক হয়েছে। সংঘর্ষের কথা আমি শুনেছি। তবে তখন আমি সেখানে ছিলাম না। আমি নির্বাচন করছি, তাই আমাকে বিপদে ফেলার জন্য মিথ্যা নাটক সাজানো হচ্ছে।’
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবির বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক মারামারি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
ওসি আরো বলেন, ‘আজ ভোরে সিরাজ অসুস্থ্ হয়ে মারা যায়। তবে তার মৃত্যু রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে। বাকিটা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে বুঝা যাবে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
নিহত সিরাজ উদ্দিনের স্ত্রী ও ছয় সন্তান রয়েছে। আজ সকালে সিরাজের বাড়ি গিয়ে দেখা যায় স্বজনদের কান্নায় সেখানকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।