রেললাইনের পাশে লাশ, পরিবার বলছে পুলিশ আটক করেছিল
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মেজবাহউদ্দিন চন্টুর লাশ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। সদর উপজেলার মানিকদিহি গ্রামের রেললাইনের পাশে লাশটি পড়ে ছিল। চন্টু একই ইউনিয়নের যুবদলের সাবেক সভাপতিও ছিলেন।
পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেছেন, পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় চন্টুকে হত্যা করে লাশ রেললাইনে পাশে ফেলে রাখা হয়েছে।
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা খবির আহমেদ জানান, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে চন্টুর লাশ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশের একটি দল। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। নিহত চন্টুর বিরুদ্ধে কৃষক লীগ নেতা শফি কামাল ও যুবলীগ নেতা শাহীন হত্যাসহ মোট ১৫টি মামলা রয়েছে বলে জানান তিনি।
নিহত চন্টুর ভাই রুহুল কুদ্দুস মন্টু দাবি করেন, দুদিন আগে ঢাকার মগবাজার থেকে চন্টুকে পুলিশ আটক করেছিল। পুলিশ যাতে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করে, সে জন্য দুদিন ধরে তাঁরা চেষ্টা করছিলেন।
মন্টু এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা খবর পাইছি, ঢাকার মগবাজার থেকে তারে আটক করছে। তারপর মগবাজার থেকে ওরে রাস্তায় নিয়ে আসছিল, রাস্তায় ওদের গাড়ি নষ্ট হওয়ায় যশোরে পৌঁছাতে লেট (দেরি) হয়। যার কারণে ওই দিন ক্রস (বন্দুকযুদ্ধ) দিতে পারিনি। ... যে ড্রাইভার ছিল ওর ভেতরে, যে গাড়িতে নিয়ে আসছিল ওই ড্রাইভার সবই জানে। ওসি সাহেব ওরে হুমকি দেছে যে, তুই যদি বলিস, তোরেও কিন্তু ক্রস দিয় দেব।’
‘তারপরেও আমি কালকের থেকে অনেক চেষ্টা করিছি.. বলছি যে, তার প্রাণভিক্ষা দেন। সে যদি অন্যায় করে থাকে, তার সাজা দেন। কোনো সমস্যা নেই। যতগুলো অন্যায় আছে, অন্যায়ের সাজা দেন আপনারা। কিন্তু তার প্রাণভিক্ষা দেন। আর যদি প্রাণভিক্ষা নাও দেন তাকে যেইভাবে সাজা দিতি হয়, তা আইনি কায়দায় দেন। এভাবে কালকের থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছি। হঠাৎ করে এখন শুনলাম যে তার লাশ পড়ে আছে।’ বলেন মন্টু।
মনিরামপুর পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহীদ ইকবাল বলেছেন, ‘দুই দিন আগে ঢাকা থেকে চন্টুকে পুলিশ আটক করে। বুধবার সকাল ৮টার দিকে যশোর ডিবি পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয় তাঁকে। এখন শুনছি, তাঁর লাশ পাওয়া গেছে।’ তিনি জানান, চন্টু ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন।
এ ব্যাপারে যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার রেশমা সুলতানা এনটিভি অনলাইনকে জানান, চন্টুর লাশ পাওয়া গেছে কি না বা তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল কি না এ ব্যাপারে তাঁর কাছে কোনো তথ্য নেই।
একই কথা জানান যশোর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুল হক। তিনিও এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।