তালা ভেঙে খোলা হলো রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
সাড়ে তিন মাস বন্ধ থাকার পর তালা ভেঙে খোলা হল রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় নির্বাহী হাকিম (ম্যাজিস্ট্রেট) ও পুলিশের উপস্থিতিতে বিভিন্ন বিভাগে লাগানো তালা ভাঙা হয়।
প্রথমে প্রশাসনিক ভবনের তালা ভাঙা হয়। এরপর বিভিন্ন দপ্তরে দেওয়া তালা ভেঙে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিকঠাক আছে কি না তা যাচাই-বাছাই করা হয়।
তালা ভাঙার সময় জেলার নির্বাহী হাকিম মিজানুর রহমান, রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোরশেদুল আলম রনি, সহকারী প্রক্টর শাহীনুর রহমানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোরশেদ উল আলম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসনে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে সহায়তা চেয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুরোধে আজ সকাল ১১টায় নির্বাহী হাকিম মিজানুর রহমান পুলিশসহ এসে তালা ভেঙে ফেলার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রশাসনিক ভবনে নিজ নিজ অফিসে প্রবেশ করেন।
একাডেমিক ভবনের তালা খুলে দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছেন বলেও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর জানায়, বেলা পৌনে ১টার দিকে অফিসে যান উপাচার্য ড. এ কে এম নূর উন নবী। ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গত নভেম্বর মাস থেকে ভিসি অধ্যাপক এ কে এম নুর উন নবীর অপসারণসহ বেশ কয়েক দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ১১ ডিসেম্বর প্রশাসনিক ভবনের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে ভিসিকে তাঁর কার্যালয়ে ঢুকতে দেননি আন্দোলনকারীরা। ২৯ জানুয়ারি থেকে একাডেমিক ভবনে তালা দিয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা গ্রহণ বন্ধ করে সর্বাত্মক ধর্মঘট শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস পরীক্ষা এমনকি চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষাও স্থগিত হয়ে যায়।
দফায় দফায় বৈঠকের পরও আন্দোলনকারীরা কোনো সমাধান না আসায় অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তালা ভেঙে ক্যাম্পাস সচল করার ঘোষণা দেয় গতকাল শনিবার রাতে।
আজ দুপুরে উপাচার্য তাঁর বাসভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় আর বন্ধ হবে না, বন্ধ হলে আবার আমরা খুলব। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বার্থেই এটা করা হয়েছে। কারণ আমি সরকারের নিয়মের বাইরে কোনো কিছুই করব না। অন্যায় করলে সরকার আমাকে সরিয়ে দেবে- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন তো ধ্বংস হতে দেওয়া যাবে না।’