মতিঝিলে খাবার হোটেল উচ্ছেদ, থাকল ব্যাংক-বীমা

রাজধানীর ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলের ঢাকা চেম্বার ভবনের সামনের বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। কিন্তু অবৈধ হওয়া সত্ত্বেও জনগণের আর্থিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ব্যাংক ও বীমা সংস্থার কয়েকটি কার্যালয় উচ্ছেদ করা হয়নি। এসব প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করে দ্রুত তাদের কার্যালয় অন্যত্র সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম মারুফ হাসানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত এই উচ্ছেদ অভিযান চালান। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাজউকের নকশা অমান্য করে অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনার মধ্যে খাবার হোটেল ও বিভিন্ন ধরনের দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ হাসান সাংবাদকিদের বলেন, ইমারত নির্মাণ আইন অনুযায়ী রাজউক থেকে অনুমোদিত নকশা নিয়েই তাদের ভবন নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ভবনের নিচে গাড়ি পার্কিং নির্ধারিত থাকার কথা থাকলেও সেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে গাড়িগুলো রাস্তার মাঝখানে এবং রাস্তার পাশে পার্কিং করা হচ্ছে। এ কারণে মতিঝিল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এই যানজট নিরসনের জন্য আমরা গত বছর তাদের সতর্ক করেছিলাম। তারপরও তারা তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
বার বার নোটিশ দেওয়ার পরও অবৈধ স্থাপনা সরানো হয়নি অভিযোগ করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক বলেন, ‘অব্যাহতভাবে আমরা গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছি এবং নোটিশ করেছি।তারা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে অবৈধ কাজ অব্যাহত রেখেছে। এখানে করপোরেট অফিস বিশেষ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আছে। ব্যাংক, বীমার মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভোল্টে জনগণের টাকাই গচ্ছিত রয়েছে। আমরা অবৈধভাবে নির্মিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলেছি। এখন যদি তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠান না সরিয়ে নেয় তাহলে আমরা আর কিছু দেখব না। সরাসরি তাদের বিরুদ্ধে আমরা উচ্ছেদ কাযক্রমে চলে যাব। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।’
ফুটপাতে উচ্ছেদ অভিযান সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ফুটপাতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব। আসলে ফুটপাতে যে ব্যবসাটা হয়, সেটাও অবৈধ ব্যবসা। ফুটপাত দখল করার কারণে পথচারীরা রাস্তা দিয়ে হাঁটছে। প্রতিবছর মতিঝিল এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় দু-একজনের প্রাণহানি ঘটছে। রাস্তা দিয়ে গাড়িগুলো যাতে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে এবং অসহনীয় যানজট না হয় এজন্য আমরা উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখব।
অবৈধ স্থাপনার জন্য জেল-জরিমানা করা হবে উল্লেখ করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, আমরা আজ যে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি, তা ভ্রাম্যমাণ আদালতের অধীনে হয়েছে। এখন যদি আবার কেউ সেখানে অবৈধ ব্যবসা চালায় তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানাসহ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ প্রথমদিন বিধায় আমরা তাদের জেল-জরিমানার আওতায় আনছি না। শুধু উচ্ছেদ অভিযানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে। কিন্তু আগামীতে জেল-জরিমানা করা হবে।