কথা বললে গুম হয়ে যাব কি না নিশ্চিত নই : এরশাদ
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ বলেছেন, ‘কোনো একটা কথা বললে, সেই কথার জন্য গুম হয়ে যাব কি না, তা আমি নিশ্চিত নই।’
আজ বুধবার বিকেলে পটুয়াখালী জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলনের উদ্বোধন অধিবেশনে এ কথা বলেন সাবেক এ রাষ্ট্রপতি। এ সময় তিনি দেশবাসীকে জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
এর আগে শিল্পকলা একাডেমির সামনে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন এরশাদ।
দীর্ঘ এক দশক পর পটুয়াখালী জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের, মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় প্রমুখ। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক খান এতে সভাপতিত্ব করেন।
সম্মেলনে দেশের বর্তমান পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘একটু আগে এক ভাই বলছিলেন, রাস্তায় বের হলে বাসায় ফিরবেন কি না আমরা কেউ নিশ্চিত নই। কোনো একটা কথা বললে, সেই কথার জন্য আমি গুম হয়ে যাব কি না আমি নিশ্চিত নই। কত মেয়ে ধর্ষিত হবে স্কুল যেতে আমি নিশ্চিত নই। আমাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। আমাদের বাঁচার কোনো নিরাপত্তা নেই, ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নেই। মানুষ এ অবস্থা থেকে বাঁচতে চায় এবং শান্তিপূর্ণ সমাজে বাস করতে চায়। এই শান্তিপূর্ণ সমাজ একমাত্র জাতীয় পার্টি উপহার দিতে পারে।’
এরশাদ বলেন, ইউপি নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে দেওয়া প্রতিশুতি রক্ষা করা হয়নি। আগামী নির্বাচনে যাতে আমরা শক্তিশালীভাবে অংশ নিতে পারি তার জন্য দলকে সুসংগঠিত করতে হবে।
এরশাদ আরো বলেন, আমার জীবনের শেষ প্রান্তে এসেছি, আরেকবার মানুষকে ভালোবাসার সুযোগ দিন। আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষের যাতে কল্যাণ করতে পারি সেই সাহায্যটা করবেন আশা করি।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হলো কয়টা আপনারা আমাদের দিয়েছেন। প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর আপনারা আমাকে তা দেননি।
এ নির্বাচন ‘প্রহসনের নির্বাচন’ হবে উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করুন। তাহলে আমরা শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারি। আল্লাহ হয়তো আমাদের আরেকবার সুযোগ দেবেন। এতে অত্যাচার-অবিচার মানুষ সহ্য করতে পারে না।
কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থায় এখন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ভূমিকাও প্রশ্নের সম্মুখীন। আগামী দিনের নির্বাচনী পরিবেশ সুন্দর করতে একটি রাজনৈতিক এজেন্ডা হাতে নিতে হবে।
সম্মেলনে মহাসচিবের অনুরোধে আবদুর রাজ্জাক খানকে সভাপতি ও খায়রুল আলম মামুনকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা কমিটি ঘোষণা করেন এরশাদ। পরে এরশাদ তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে পর্যটন এলাকা কুয়াকাটায় যান। সেখানে তিনি রাত্রিযাপন করবেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।