১০ হাজার টাকার জন্য জোড়া খুন!
যাত্রাবাড়ীর জোড়া খুনের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। পুলিশ বলছে, গৃহকর্মীর ছেলে সাঈদ হাওলাদার এক সহযোগীকে সাথে নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। গৃহকর্ত্রীকে খুন করা দেখে ফেলায় আপন ছোট বোনকেও হত্যা করে সে ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মো.মনিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাঈদ দায় স্বীকার করেছে। ১০ হাজার টাকা না পেয়ে সে খুনের পথ বেছে নেয় বলে জানিয়েছে।
গত ২৪ মার্চ বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে নিজ বাসায় খুন হন সাবেক এক পুলিশ কর্মকতার স্ত্রী রওশন আরা ও গৃহকর্মীর মেয়ে কল্পনা।
আজ বৃহস্পতিবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মনিরুল ইসলাম জানান, গতকাল বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে গৃহপরিচারিকার ছেলে সাঈদ হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাঈদ স্বীকার করেছে, রিয়াজ নামের এক সহযোগীকে সাথে নিয়ে সে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে।
মনিরুল ইসলাম আরো জানান, হত্যাকাণ্ডের পর ওই বাসায় লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। তবে সাঈদ শুধু ১৪ হাজার ৪০০ টাকা ও একটি ল্যাপটপ ও একটি মোবাইল নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। ল্যাপটপ ও মোবাইল বিক্রি করে দিয়েছে। আরেকটি মোবাইল ছিল, সেটি নেওয়ার কথা স্বীকার করছেনা। সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, রওশন আরা বেগমের (৬৫) পাঁচ সন্তানই বিদেশে থাকেন। এক নাতি, এক গৃহকর্মী ও তার এক মেয়ে নিয়ে রওশন আরা ওই বাসায় থাকতেন। সাঈদও আগে ওই বাসাতেই থাকত। কিন্তু বখাটে হয়ে যাওয়ায় তাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। সে একটি গ্যারেজে কাজ করত। কিন্তু ওই বাসায় ওর যাতায়াত অব্যাহত ছিল। ওই দিন বন্ধু রিয়াজকে নিয়ে বাসায় এসে দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করে।
সাঈদ গোয়েন্দা পুলিশকে জানায়, ঘটনার দিন সে বাড়ির মালিক রওশন আরার কাছে ব্যবসার জন্য ১০ হাজার টাকা ধার চায়। কিন্তু না পাওয়ায় তার মাথা গরম হয়ে যায়। পরে ফল কাটার ছুরি দিয়ে তাঁকে হত্যা করে। এ ঘটনায় গৃহকর্মীর মেয়ে অর্থাৎ তার ছোট বোন দেখে ফেললে তাকেও হত্যা করে সাঈদ ও রিয়াজ।
মনিরুল ইসলাম বলেন, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। টাকা ধার চাওয়ার বিষয়টি অজুহাত। রওশন আরার পাঁচ সন্তানই যেহেতু বিদেশে থাকে এবং সম্প্রতি রওশন আরা আমেরিকা ঘুরে এসেছেন তাই সাঈদের ধারণা ছিল, এই বাসায় আরো টাকা, ডলার ও মূল্যবান জিনিস পাবে। সহযোগী রিয়াজকে খুঁজে বের করতে কাজ করছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পিছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।