নওগাঁয় নিপাহ ভাইরাসে তিনজনের মৃত্যু, এলাকাজুড়ে আতঙ্ক

নওগাঁর মান্দা উপজেলায় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত এক সপ্তাহে দুই শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। মৃতদের শরীরে নিপাহ ভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন নওগাঁর সিভিল সার্জন মোজাহারুল ইসলাম।
নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া দুই শিশুর নাম আপেল মাহমুদ (১১) ও কাওসার আলী (১৩)। তারা মান্দা উপজেলার ভালাইন ইউনিয়নের বাসিন্দা। মারা যাওয়া অন্য ব্যক্তি একই উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের বালুবাজার গ্রামের হাফিজুল ইসলাম (২৫)।
গতকাল সোমবার বিকেলে শিশু আপেল মাহমুদের মা জুলেখা বিবি এনটিভিকে জানান, গত ২০ জানুয়ারি আপেল মাহমুদ খেজুরের রস পান করে। ২২ জানুয়ারি জ্বরে আক্রান্ত হলে বিকেলে তাকে নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। একই দিন আপেলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ জানুয়ারি মারা যায় আপেল।
জ্বরে আক্রান্ত কাওসার আলীকে ২৪ জানুয়ারি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৯ জানুয়ারি পরিবারের লোকজন তাকে বাড়ি নিয়ে আসে। পরদিন ৩০ জানুয়ারি সকালে কাওসার মারা যায়। অন্যদিকে বালুবাজার গ্রামের হাফিজুল ইসলাম (২৫) বরই খেয়ে জ্বরে আক্রান্ত হলে ১৭ জানুয়ারি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই ২২ জানুয়ারি তিনি মারা যান।
নওগাঁর সিভিল সার্জন মোজাহারুল ইসলাম এনটিভিকে জানান, মারা যাওয়া দুই শিশুসহ তিনজনের লালা ও রক্ত পরীক্ষা করে নিপাহ ভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে। ঘটনার তদন্তে তিন চিকিৎসক জাহিদ নজরুল চৌধুরী, মনোরঞ্জন মণ্ডল ও আল মাসুদ মিজানুর রহমানকে নিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের ছয় সদস্যের একটি দল এলাকা পরিদর্শনে আসবে বলে জানিয়েছেন মোজাহারুল ইসলাম।
এদিকে, নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যুসংবাদে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। খেজুরের রস খাওয়া ও সংগ্রহ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় মানুষ। তবে নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন করতে কাজ করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
মোজাহারুল ইসলাম আরো জানিয়েছেন, এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিবেদন না দেওয়ায় মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য পরিদর্শক (ইনচার্জ) ফয়েজ উদ্দিন তরফদার ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক তাইজুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।