জুড়ীর ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার মামলা
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী মনির বিরুদ্ধে এক কলেজ ছাত্রীর শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার জুড়ী থানায় এই মামলা করা হয়।
মামলার এজাহার ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী মনি আগের একটি ইভটিজিং মামলার আপস নিষ্পত্তির সূত্র ধরে গত বছরের ২৮ নভেম্বর রাত সাড়ে ১২টায় জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নে এক মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীর বাড়িতে যান। প্রবাসীর স্ত্রী দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে থাকতেন। রাতেই ভাইস চেয়ারম্যান মনি প্রবাসীর স্ত্রীকে জানান, ইভটিজিং মামলার হাজিরা দিতে পরের দিন মৌলভীবাজার আদালতে তিনি নিয়ে যাবেন। তাকে ছাড়া আদালতে গেলে পুলিশ তাঁদের আটক করে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেবে। পরে ভাইস চেয়ারম্যন মনি গৃহবধূর কাছ থেকে চেয়ে রাতের খাবার খান এবং বাড়িতে রাতে থাকার প্রস্তাব দেন। এ সময় গৃহবধূ ভাইস চেয়ারম্যানকে রাতে তাঁর বাড়িতে চলে গিয়ে সকালে আসার অনুরোধ করেন। পরে চেয়ারম্যন মনি জানান, রাস্তায় বের হলে জামায়াতের লোকজন তাঁকে মেরে ফেলবে জানালে রাতে তাঁদের ঘরের একটি কক্ষে থাকার সম্মতি দেন গৃহবধূ। তখন ভাইস চেয়ারম্যান মনি গৃহবধূর কলেজপড়ুয়া মেয়েকে তাঁর কক্ষে পাঠানোর প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ভাইস চেয়ারম্যান মনি জোর করে কলেজপড়ুয়া ছাত্রীর কক্ষে ঢুকে শ্লীলতাহানি ঘটান এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় গৃহবধূর পরিবারে সদস্যরা চিৎকার করলে ভাইস চেয়ারম্যান কিশোর রায় মনি পালিয়ে যান। এ ঘটনার পর বিভিন্ন সময়ে গৃহবধূ স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) প্রশাসনের বিভিন্নজনের কাছে বিচার চান। তাঁরা একজন অন্যজনের কাছে যাওয়ার কথা বলে সময়ক্ষেপণ করেন। এ কারণে বিচার না পেয়ে মামলা করতে তাঁদের দেরি হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী মনি জানান, যে নারী জুড়ী থানায় মামলা করেছেন তাঁকে কিংবা তাঁর মেয়েকে তিনি চিনেন না। একটি প্রভাবশালী মহল ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। গত কয়েকদিন আগে তাঁর বাসায় হামলা চালিয়েছে। এরাই ওই নারীকে দিয়ে থানায় মিথ্যা মামলা করিয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হামিদুর রহমান সিদ্দিকী জানান, প্রায় ছয় মাস আগের একটি ঘটনায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী মনির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (২০০০ সংশোধিত) এর ৯ (৪) (খ) ধারায় এক গৃহবধূ থানায় বুধবার মামলা করেছেন। পুলিশ মামলাটির তদন্ত শুরু করেছে।