রাঙামাটিতে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি
রাঙামাটিতে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়েছে। ৪৮টি ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগ ১৩টি, বিএনপি একটি, পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ২৪টি, ইউপিডিএফ আটটি, জেএসএস-এমএন লারমা একটি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একজন বিজয়ী হয়েছেন।
বেসরকারিভাবে পাওয়া ফলে নানিয়ারচর উপজেলায় নিজেদের শক্ত ঘাঁটিতে আবারও শক্তিমত্তার প্রদর্শন করল পাহাড়ের অন্যতম প্রভাবশালী আঞ্চলিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। নানিয়ারচরের বুড়িঘাটে প্রমোদ খীসা, ঘিলাছড়িতে অমরজীবন চাকমা, সাবেক্ষ্যংয়ে সুপন চাকমা ও নানিয়ারচর সদরে যতীলাল চাকমা বিজয়ী হয়েছেন। তাঁরা সবাই ইউপিডিএফ সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।
বরকল উপজেলার পাঁচটি ইউপির চারটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও একটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ীরা হলেন ভূষণছড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মামুনুর রশীদ মামুন, বড় হরিণায় জনসংহতি সমিতির লীলাময় চাকমা, সুবলংয়ের জনসংহতির তরুণ জ্যোতি চাকমা, বরকল সদরে একই সংগঠনের কমলেন্দু বিকাশ চাকমা ও আইমাছড়ায় একই সংগঠনের অমর কুমার চাকমা স্বতন্ত্র পরিচয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপকারী ইউনিয়নে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের শ্যামল চাকমা, আমতলীতে আওয়ামী লীগের রাসেল চৌধুরী, সারোয়াতলীতে জনসংহতি সমিতির তুষার কান্তি চাকমা, খেদারমারায় জনসংহতির সন্তোষ চাকমা, বঙ্গলতলীতে ইউপিডিএফের জ্ঞান জ্যোতি চাকমা, সাজেকে জেএসএস-এমএন লারমার নেলসন চাকমা ও সদরে জেএসএসের সুনীল বিহারি চাকমা জয়ী হয়েছেন।
রাঙামাটি সদর উপজেলার ছয় ইউনিয়নের প্রাপ্ত বেসরকারি ফলে বিজয়ী হয়েছেন সাপছড়িতে জনসংহতি সমিতি সমর্থিত মৃণাল কান্তি চাকমা, বালুখালিতে একই সংগঠনের গিরি চাকমা, বন্দুকভাঙ্গায় বরুণ কান্তি চাকমা, জীবতলীতে সুদত্ত বিকাশ চাকমা, মগবানে জনসংহতির বিশ্বজিৎ চাকমা এবং কুতুকছড়িতে ইউপিডিএফ সমর্থিত কানন চাকমা বিজয়ী হয়েছেন।
রাজস্থলীর তিনটি ইউনিয়নের দুটিতে জনসংহতি সমিতি ও একটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। রাজস্থলীর ঘিলাছড়িতে বিজয়ী হয়েছেন জনসংহতি সমিতির সুশান্ত চাকমা ও গাইন্দ্যায় নির্বাচিত হয়েছেন একই দলের উথান মারমা। আর বাঙ্গালহালিয়ায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নিউমং মারমা।
লংগদু উপজেলার সাত ইউনিয়নের বেসরকারি ফলে আওয়ামী লীগ চারটি, বিএনপি একটি, জনসংহতি সমিতি একটি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী একটি ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছেন। লংগদু সদর ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কুলিনমিত্র চাকমা, গুলশাখালীতে বিজয়ী হয়েছেন বিএনপির আবু নাছের, আটারকছড়ায় জনসংহতি সমিতি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মঙ্গলকান্তি চাকমা, কালাপাকুজ্জ্যায় আওয়ামী লীগের মো. মোস্তফা মিয়া, ভাসাইন্যাদমে আওয়ামী লীগের মো. হযরত আলী, মাইনীতে আওয়ামী লীগের বারেক সরকার ও বগাচতরে আওয়ামী লীগের আবদুর রশীদ বিজয়ী হয়েছেন।
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে চারটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সীমানা জটিলতার কারণে চন্দ্রঘোনার নির্বাচত স্থগিত হওয়ায় বাকি চারটিতে শনিবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুটিতে আওয়ামী লীগ ও দুটিতে জেএসএস সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। কাপ্তাই সদর ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের আব্দুল লতিফ, রাইখালীতে জনসংহতি সমিতির ছায়া মং মারমা, চিৎমরমে জেএসএসের চাইচা মং মারমা, ওয়াগ্গ্যায় আওয়ামী লীগের চিরঞ্জীব তংচঙ্গ্যা বিজয়ী হয়েছেন।
জুরাছড়ি উপজেলার চারটি ইউনিয়নের দুটির বেসরকারি ফল পাওয়া গেছে। এতে জনসংহতি সমিতি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সন্তোষ বিকাশ চাকমা বনযোগিছড়ায়, জুরাছড়ি সদর ইউনিয়নে ক্যানন চাকমা, দুমদুইম্যায় শান্তিরঞ্জন চাকমা ও মৈদংয়ে সাধনানন্দ চাকমা জয়ী হয়েছেন।
কাউখালীর বেতবুনিয়ায় বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের খইচাবাই তালুকদার ও কলমপতিতে আওয়ামী লীগের ক্যজাই মারমা বিজয়ী হয়েছেন। এর আগে ফটিকছড়িতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ইউপিডিএফের ধন কুমার চাকমা। ঘাগড়া ইউনিয়নে জয়ী হন ইউপিডিএফের জগদীশ চাকমা।
বিলাইছড়িতে সদরে জনসংহতি সমিতির সুনীল কান্তি দেওয়ান, ফারুয়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্যালাল তংচঙ্গ্যা ও কেংড়াছড়িতে জনসংহতি সমিতির অমরজীব চাকমা বিজয়ী হয়েছেন।