রোববার তদন্ত প্রতিবেদন
রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম (রহ.) বিমানবন্দরে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় তদন্তদল প্রাথমিক কাজ শেষ করেছে। দলের সদস্যরা গত তিনদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন, বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন। তদন্তদলের প্রধান সিভিল এভিয়েশনের সিনিয়র ফ্লাইট অপারেশন ইন্সপেক্টর ক্যাপ্টেন এইচ এম আক্তার খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি আজ শুক্রবার ঢাকায় ফিরে গেছে।
এইচ এম আক্তার খান শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকের জানান, ১ এপ্রিল বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের মাধ্যমে তদন্তকাজ শুরু হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটির চার সদস্য আবারও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় সেখান থেকে বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়।
এ ছাড়া বিমানবন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আশপাশে প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তথ্য-উপাত্তগুলো এখন তিনটি ধাপে যাচাই-বাছাই করা হবে। কমিটির অন্য সদস্যদের নিয়ে আলোচনার পরে আগামী রোববার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে জানান তদন্ত দলের প্রধান।
প্রশিক্ষণ উড়োজাহাজ সেসনা-১৫২ সম্পর্কে ক্যাপ্টেন এইচ এম আক্তার খান বলেন, দুনিয়াব্যাপী এ জাতীয় উড়োজাহাজ দিয়েই পাইলট তৈরি করা হয়। এসব উড়োজাহাজ যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি। এর গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না। আর তাঁর প্রশিক্ষক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শাহেদ কামাল খুবই দক্ষ। তাঁর পাঁচ হাজার ঘণ্টা প্রশিক্ষণ উড্ডয়নের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
তদন্তদলের প্রধান আরো জানান, নিয়মানুযায়ী পারসোনাল পাইলট লাইসেন্স (পিপিএল) কোর্সে এককভাবে ৫০ ঘণ্টা উড়োজাহাজ চালাতে পারলে একটি সনদপত্র দেওয়া হয়। পরে কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (সিপিএল) কোর্সে ভর্তি হতে হয়। তামান্না রহমান পিপিএল কোর্সের প্রশিক্ষণে ছিলেন।
তদন্ত কমিটির অপর তিন সদস্য হচ্ছেন ডা. আবদুল খালেক, লুৎফুল কবির ও আতাউল্লাহ হাশমী। তদন্ত কমিটির প্রধান এইচ এম আক্তার খান বাংলাদেশ এয়ারক্রাফট অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন টিমেরও প্রেসিডেন্ট।
গত দুই বছর থেকে বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমি রাজশাহী শাহ মখদুম বিমানবন্দরটি ব্যবহার করে আসছে। রাজশাহীতে তাদের যে দুটি প্রশিক্ষণ বিমান রয়েছে, সেগুলো ভাড়া করা। তবে দুর্ঘটনার পর থেকে প্রশিক্ষণ আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে প্রায় ১৪ জন প্রশিক্ষণার্থী রাজশাহী ছেড়ে চলে গেছেন।
বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমির একটি প্রশিক্ষণ বিমান গত বুধবার উড্ডয়নের পর প্রায় দেড়শ ফুট উচ্চতা থেকে রানওয়েতে আঁছড়ে পড়ে আগুন ধরে যায়। এতে প্রশিক্ষণার্থী পাইলট তামান্না রহমান নিহত ও পাইলট শাহেদ কামাল গুরুতর দগ্ধ হন।