‘সরকার চাইলে যেকোনো সময় ফাঁসি কার্যকর’
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় বহাল থাকার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, সরকার চাইলে যেকোনো সময় তাঁর দণ্ড কার্যকর করতে পারবে। তবে সুপ্রিম কোর্ট রিভিউ আবেদন খারিজ করার যে আদেশ দিয়েছেন, তার অনুলিপি স্বাক্ষর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আজ সোমবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট ইচ্ছা করলে অনুলিপিটি সরাসরি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে পারেন অথবা ট্রাইব্যুনালের কাছেও পাঠাতে পারেন। ট্রাইব্যুনাল পরে তা কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে পারেন।’
‘কারা কর্তৃপক্ষের কাছে রায়ের অনুলিপি পাঠানোর পর তা কামারুজ্জামানকে আনুষ্ঠানিকভাবে পড়ে শোনানো হবে। এর পর যদি তিনি রায় শুনে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন, তাহলেই কেবল রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। প্রাণভিক্ষার আবেদন না করলে স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন। এর পরই দণ্ড কার্যকরা করা যাবে,’ যোগ করেন মাহবুবে আলম।
রায় কার্যকর করার ক্ষেত্রে কারাবিধি প্রযোজ্য নয় বলেও জানান অ্যাটর্নি জেনারেল। রাষ্ট্রপতির কাছে মানবতাবিরোধী অপরাধীরা প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংবিধানে বিষয়টি এখনো সংশোধন করা হয়নি, যে কারণে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত বছরের ৩ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। চলতি বছর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। এর পর ১৯ ফেব্রুয়ারি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছায়। ৫ মার্চ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় কামারুজ্জামানের পক্ষে রিভিউ আবেদন করা হয়।
২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী সাতটি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের ৪ জুন কামারুজ্জামানের বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুটিতে মৃত্যুদণ্ড, দুটিতে যাবজ্জীবন ও একটিতে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।