জুবায়ের হত্যা মামলার রায় পেছাল

জাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার রায় ঘোষণার নির্ধারিত দিন ছিল। আদালত তা পিছিয়ে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার ধার্য করেছেন। ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ বি এম নিজামুল হক রায় ঘোষণার পরবর্তী এ দিন ধার্য করেন।
হরতাল-অবরোধে নিরাপত্তাজনিত কারণে আসামিদের আদালতে হাজির করতে না পারায় রায়ের পরবর্তী তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী জামাল উদ্দিন খন্দকার। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘প্রসিকিউশনের দায়িত্ব ছিল আসামিদের আদালতে উপস্থিত করা। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ তাদের আদালতে উপস্থিত করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। হরতাল-অবরোধে বড় বড় নেতাদেরও আদালতে উপস্থিত করা হয়, রাষ্ট্রপক্ষ চাইলেই আজই আসামিদের আদালতে হাজির করতে পারত। কিন্তু কোনো এক অজ্ঞাত কারণে রাষ্ট্রপক্ষ তা করেনি।’
এ ছাড়া কারাগারে থাকা সাত আসামির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই দাবি করে আসামিপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, পালিয়ে যাওয়া চারজনের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাছলিমা ইয়াসমিন দিপা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ট্রাইব্যুনাল প্রস্তুত ছিলেন, রাষ্ট্রপক্ষও প্রস্তুত ছিল। কিন্তু আসামি অনুপস্থিত থাকার কারণে রায় ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি।
২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি ছাত্রলীগের কর্মী জুবায়েরকে কুপিয়ে জখম করে তাঁরই সংগঠনের একটি পক্ষ। পরদিন ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জুবায়ের। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রেজিস্ট্রার হামিদুর রহমান আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।
২০১২ সালের ৮ এপ্রিল ১৩ ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মীর শাহীন শাহ পারভেজ। তাঁরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র শফিউল আলম সেতু ও অভিনন্দন কুণ্ডু অভি, লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাত্র নাজমুল হাসান প্লাবন, দর্শন বিভাগের কামরুজ্জামান সোহাগ, ইতিহাস বিভাগের মাজহারুল ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান এবং অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের নাজমুস সাকিব তপু, প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের আশিকুল ইসলাম আশিক, খান মোহাম্মদ রিয়াজ ও জাহিদ হাসান, দর্শন বিভাগের ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ, রাশেদুল ইসলাম রাজু, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মাহবুব আকরাম।
এর মধ্যে আশিক, রিয়াজ, আকরাম ও অরূপ এ চারজন শুনানি চলাকালে কাঠগড়া থেকে পালিয়ে যান।
পরবর্তী সময়ে আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে এবং মামলার কাযক্রম দ্রুত নিষ্পত্তি করতে সরকারের নির্দেশনায় মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করা হয়।
এরপর ২০১৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল ।
এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি মামলার রায় ঘোষণার দিন ঠিক করে জামিনে থাকা ৭ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।