শিক্ষার্থীদের গাইড কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ৭৬ নম্বর তেলিপাড়া হাইস্কুল সংযুক্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গাইড বই কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিয়ে বসা সালিসে অভিযোগটি আলোচিত হলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত শনিবার বিদ্যালয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এনটিভি অনলাইনকে জানান, বছরের প্রথম থেকেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস ওয়াহিদ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের গাইড বই কেনার কথা বলেন। তিনি তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য স্কয়ার গাইড আর দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য জুপিটার গাইড নির্ধারণ করেন। প্রধান শিক্ষক নির্ধারিত গাইডগুলো প্রকাশনার লোকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সংরক্ষণ করেন।
পরে তা নির্ধারিত মূল্যে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৪৫০ টাকা ও দ্বিতীয় শ্রেণির গাইড বই ১২০ টাকায় শিক্ষার্থীদের কিনতে বাধ্য করা হয়।
দ্বিতীয় শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী এনটিভি অনলাইনকে বলে, ‘স্যার বলেছেন, প্রত্যেককে একটি করে জুপিটার গাইড কিনতে হবে। তাই আমরা ১২০ টাকা করে দিয়ে গাইড বই কিনেছি।’
বিদ্যালয়টিতে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছিল।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি খোকন দে জানান, সম্প্রতি শিক্ষার্থীকে ডাস্টার ছুড়ে মারার অভিযোগে এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে গত শনিবার বিদ্যালয় মাঠে এক সালিস বসে। সালিসে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। সালিসের এক পর্যায়ে জোর করে গাইড বই বিক্রির প্রসঙ্গও চলে আসে। এরপরই সালিসে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে নিজেদের মধ্যেই হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় খোকন দেসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মালেক করাতি ও স্থানীয় বাসিন্দা বাবু চৌধুরী ও রফিক ঢালী আহত হন।
খোকন দে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের শিক্ষকের গাইড বই বিক্রি ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা সভা চলছিল। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ হয়।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস ওয়াহিদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, গাইড বইগুলো শিক্ষার্থীরা নিজের উদ্যোগে বাজার থেকে সংগ্রহ করেছে। গাইড বই বেচাকেনা নিয়ে কোনো সালিস হয়নি।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক রাম চন্দ্র দাস এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘উন্মুক্তভাবে গাইড বই বিক্রি করার কোনো বিধান নেই। কোনো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের গাইড বই কিনতে উৎসাহী করতে পারেন না। এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ব্যবস্থা নেবেন।’