বিরল সম্মানে ঝিনাইদহের এসপি আলতাফকে বিদায়
ঝিনাইদহে নবাগত পুলিশ সুপার হিসেবে মিজানুর রহমান যোগ দিয়েছেন। আজ শুক্রবার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। এর আগে তিনি গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সব মহলের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
অপরদিকে আজ বিকেলে স্থানীয় পুলিশ লাইন্সে সাবেক পুলিশ সুপার মো. আলতাফ হোসেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হয়। এ সময় তাঁকে বহন করা একটি জিপে দড়ি বেঁধে ফুল ছিটিয়ে পুলিশ লাইন্সের মূল গেটে নিয়ে যাওয়া হয়। দড়ি ধরে জিপটি টেনে নেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজবাহার আলী শেখ, সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) গোপীনাথ কানজি লাল, সদর থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ধীরেন্দ্র নাথ সরকারসহ পুলিশ সদস্যরা। সেখান থেকে তিনি পরবর্তী কর্মস্থল সাতক্ষীরা জেলার উদ্দেশে সপরিবারে রওনা হন। তিনিই প্রথম এসপি যাকে বিরল এই সম্মান দিয়ে বিদায় জানানো হলো। এ অনুষ্ঠানে নবাগত পুলিশ সুপারসহ জেলায় কর্মরত অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিকেল পৌনে ৫টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখের নেতৃত্বে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থায় ঝিনাইদহ জেলার সীমান্তে বারোবাজার এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হয় আলতাফ হোসেনকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারিতে আলতাফ হোসেন ঝিনাইদহ জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দেন। তাঁর সময়ে নাশকতা, চাঞ্চল্যকর পুরোহিত, সেবায়েত, ভিন্নধর্মাবলম্বী খুন, অসংখ্য ডাকাতি, লোমহর্ষক চুরি এবং রেকর্ড সংখ্যক ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটে। এতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন আলতাফ হোসেন। গুলশান হামলার ঘটনায় জড়িত জঙ্গি নিব্রাস ইসলামের অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলে গণমাধ্যমের তোপের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। সবশেষ ঝিনাইদহে কোনো জঙ্গি আস্তানা নেই দাবি করে তাক লাগিয়ে দেন আলতাফ হোসেন।
২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং পরবর্তী সময়ে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন আলতাফ হোসেন। পুলিশে জনবল নিয়োগ ইস্যুতে তাঁর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগদলীয় স্থানীয় চার সংসদ সদস্যসহ জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা দফায় দফায় সরকারের উচ্চ মহলে নালিশ করেছেন। দোকান মালিক সমিতি জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র পোস্ট অফিস মোড়ে ঘোষণা দিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে মিছিল সমাবেশ করেছে। তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কোনোভাবেই বদলি করা যায়নি তাঁকে। অবশেষে দীর্ঘ তিন বছর পাঁচ মাস নয়দিন পর বদলি হন তিনি।
ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু, লেডিস ক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে আলতাফ হোসেনকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।