পঞ্চগড়ে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় কাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। তাদের সঙ্গে ওই স্কুলের সভাপতি ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ হাসান আজ শনিবার জানান, উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে রওশন জাহান জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি হয়েছে তা ভিত্তিহীন। এলাকার একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, গত ১৩ জুন পঞ্চগড় জেলা সদরের শিংপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা দেওয়া হয়। ওই দিন সেখানে জেলার সদর উপজেলার কাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকাও দেওয়া হয়।
কিন্তু কাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে রওশন জাহান ও সহকারী শিক্ষক আওলাদ হোসেন কৌশলে প্রতিষ্ঠানের প্রতি শিক্ষার্থী প্রতি নির্ধারিত বৃত্তি থেকে ১০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত কম দেন।
এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে না জানিয়েই তার বৃত্তির টাকা উত্তোলন করে তা আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আজমল আজাদের যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সাকিবের মা গোলাপী বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে ১২০০ টাকা পাওয়ার কথা। সেখানে তাকে দেওয়া হয়েছে ৬০০ টাকা। আমি এর প্রতিবাদ করলে তিনদিন পর প্রধান শিক্ষক আমাকে বাকি ৬০০ টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য লোকমারফত খবর পাঠায়। কিন্তু আমি তা নেইনি।’
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ইমরানের মা মালেকা বেগম বলেন, ‘আমি আমার ছেলের উপবৃত্তির টাকা নিতে গেলে কোনো টাকা না দিয়েই আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে আমি অভিযোগ করি। বিষয়টি জানাজানি হলে কয়েকদিন পর সহকারী শিক্ষক আওলাদ হোসেন আমার ছেলের প্রাপ্ত ১২০০ টাকার মধ্যে ৬০০ টাকা বাড়িতে এনে দেয়।’
একই কথা বলেন অভিভাবক রেখা বেগম। তিনি জানান, ওই বিদ্যালয়ে আমার ছেলে রাকিব পঞ্চম শ্রেণিতে এবং মেয়ে বেনজিন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তাদের জন্য নির্ধারিত উপবৃত্তির ২৪০০ টাকার পরিবর্তে ১৬০০ টাকা দেওয়া হয়।