চলে গেলেন শেরপুরের ইতিহাসবিদ ফসিহুর রহমান
চলে গেলেন শেরপুরের ‘পণ্ডিত স্যার’ খ্যাত শিক্ষাবিদ, ইতিহাস প্রণেতা ফসিহুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে তিনি ঢাকার পঙ্গু হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।(ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
পণ্ডিত ফসিহুর রহমান ‘শেরপুর জেলার অতীত ও বর্তমান’ নামে জেলার ইতিহাসের প্রথম বই প্রকাশ করেন। তাঁর লেখা নাটক ‘মানিক বিদ্যালয়’, ‘ভাইবোন’, ‘ম্যালেরিয়া কনফারেন্স’, ‘স্বাধীনতার অন্বেষা’ মঞ্চায়ন হয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ১৯৪২ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করার পর ‘গুরু ট্রেনিং’, ‘ভার্নাকুলার মাস্টার শপ’ ও কারুকলা বিষয়ে কোর্স সম্পন্ন করায় ‘পণ্ডিত স্যার’ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।
শেরপুরের মাধবপুর এলাকার ফসিহুর রহমান মুক্তিযুদ্ধ ও প্রগতিশীল আন্দোলনের একজন সংগঠক ছিলেন। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও সেবামূলক কাজে তিনি অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছেন। শিক্ষা বিশেষ করে নারী শিক্ষা প্রসারে তাঁর অবদান অপরিসীম। শেরপুরে তিনিই প্রথম ‘ইতিহাস পরিষদ’ সংগঠন গড়ে তোলেন। একজন সফল শিক্ষাবিদ হিসেবে তিনি কর্মজীবনে শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, যোগিনীমুড়া উচ্চ বিদ্যালয়, তেরাবাজার জামিয়া সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসায় দীর্ঘ ৭৮ বছর শিক্ষকতা করেছেন।
মৃত্যুকালে এই ইতিহাসবিদ স্ত্রী, পাঁচ পুত্র, তিন কন্যা রেখে গেছেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ফরিদুর রহমান, একুশে টেলিভিশন ও দৈনিক সংবাদের শেরপুর প্রতিনিধি শরিফুর রহমানের বাবা।
তাঁর মৃত্যুতে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, সংসদ সদস্য ফজলুল হক চান, জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম, পৌর মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া, জেলা মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম হিরু, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন গভীর শোক প্রকাশ করেছে।