খোঁজ মিলেছে সালাহ উদ্দিনের
বিএনপির ‘নিখোঁজ’ যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাঁর পরিবারের সদস্যরা এ দাবি করেছেন। ‘নিখোঁজ’ হওয়ার ৬৩ দিন পর তাঁর খোঁজ পাওয়ার খবর পাওয়া গেল পরিবারের পক্ষ থেকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনো এ ব্যাপারে কিছু জানে না বলে দাবি করেছে।
সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ জানান, আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ভারতের কোনো একটি স্থান থেকে তাঁকে ফোন করেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
পরে এ ব্যাপারে কথা বলতে দুপুরে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর গুলশানের বাসভবনে দেখা করেন হাসিনা আহমেদ। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠকের পর দুপুর দেড়টার কিছু পরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
হাসিনা আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, সকালে সালাহ উদ্দিন ভারতের কোনো একটি স্থান থেকে ফোন করে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে ঠিক কোন স্থান থেকে ফোন করেছিলেন বা কীভাবে সেখানে গেলেন, এ প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
urgentPhoto
হাসিনা আহমেদ বলেন, ‘আমি ১০ মিনিটের জন্য বাসায় যাচ্ছি। ফিরে এসে সংবাদ সম্মেলন করে এ নিয়ে কথা বলব।’ এর পর নিজের বাসার দিকে চলে যান তিনি।
‘নিখোঁজ’ হওয়ার ৬৩ দিন পর তাঁর খোঁজ পাওয়ার খবর পাওয়া গেল পরিবারের পক্ষ থেকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনো এ ব্যাপারে কিছু জানে না বলে দাবি করেছে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান এনটিভি অনলাইনকে জানান, সালাহ উদ্দিন আহমেদের খোঁজ পাওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
এ ব্যাপারে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মিডিয়া উইংয়ের কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আপনারা যেমন দেখেছেন, আমরাও তেমন দেখেছি। এ বিষয়ে আর কিছুই জানি না। উনি (হাসিনা আহমেদ) বলেছেন, সুতরাং কোথায় আছেন, তা উনিই ভালো জানেন।’
এর আগে গত ১৯ মার্চ গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের দুর্গম চরাঞ্চলে সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান পাওয়ার গুজব উঠেছিল। পরে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কারো সন্ধান পায়নি।
গত ১০ মার্চ থেকে ‘নিখোঁজ ছিলেন’ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তাঁর পরিবার ও দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে।
তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করা হয়নি বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান চেয়ে ১১ মার্চ রাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গুলশান ও উত্তরা পশ্চিম থানায় যান তাঁর স্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। তবে কোনো থানাই তাঁর জিডি গ্রহণ করেনি।
সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি দেন তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ।
রাজধানীর উত্তরার একটি বাড়ি থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ১০ মার্চ—এমন অভিযোগ করে থানা পুলিশের পাশাপাশি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন সালাহ উদ্দিনের পরিবার।
১২ মার্চ হাসিনা আহমেদের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে কেন খুঁজে বের করা হবে না এবং রোববার তাঁকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত ২০ এপ্রিল হাইকোর্ট আগামী ছয় মাস সালাহ উদ্দিন আহমদের খোঁজ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেন।