পঞ্চগড়ে আ. লীগ ছয়টি, বিএনপি একটিতে জয়ী
পঞ্চগড় জেলার সদর, বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার আটটি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে বেসরকারি ফলে চেয়ারম্যান পদে ছয়টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী, একটিতে বিএনপি ও একটিতে স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী) জয়ী হয়েছেন।
অপর একটি ইউনিয়নের ফল ঘোষণা করা হয়নি।
সদর
নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, জেলার সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম মুসা কলিমুল্লাহ চার হাজার ৫৮৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির ইসমাইল হোসেন মেম্বার। তিনি পেয়েছেন তিন হাজার ৪৫৭ ভোট।
দেবীগঞ্জ
উপজেলার ট্রেপ্রিগঞ্জ ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. গোলাম রহমান সরকার ছয় হাজার ৭২৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. আবু তাহের সরকার। তিনি পেয়েছেন তিন হাজার ১৮৪ ভোট।
চিলাহাটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামাল মোস্তাহারুল হাসান প্রধান নয়ন নয় হাজার ১৭৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী মো. সহিদুল আলম। তিনি পেয়েছেন ছয় হাজার ৮৮৪ ভোট।
বোদা
উপজেলার ময়দানদীঘি ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আবদুল জব্বার সাত হাজার ৬২০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী হাবিব আল আমীন ফেরদৌস। তিনি পেয়েছেন ছয় হাজার ৩৩ ভোট।
মাড়েয়া বামনহাট ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু আনছার মো. রেজাউল করিম শামীম সাত হাজার ৩৭৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রুহুল আমিন প্রধান। তিনি পেয়েছেন দুই হাজার ৫৩৯ ভোট। কাজলদীঘি কালিয়াগঞ্জ ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. আলাউদ্দীন আলাল পাঁচ হাজার ২৫৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনিরুজ্জামান শ্যামল। তিনি পেয়েছেন চার হাজার ৪৭৯ ভোট।
বড়শশী ইউপিতে বিএনপির প্রার্থী মো. আফজাল হোসেন পাঁচ হাজার ১১৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মশিউর রহমান। তিনি পেয়েছেন চার হাজার ৪৬১ ভোট।
বোদা ইউপির উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মসিউর রহমান মানিক চার হাজার ১৬০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী ম আ ব সিদ্দীক মহব্বত পেয়েছেন দুই হাজার ৬৩৮ ভোট।
ফল নিয়ে সংঘর্ষ
এদিকে, সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ফল বেসরকারি ষোষণা করা হয়নি। এ ইউপির ডাংগীপুকুরী কেন্দ্রের ফল ঘোষণা না করে সদর উপজেলায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে জামায়াত সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সাইয়েদ নূরী আলমকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।
ওই সময় ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তাঁরা এ ফল প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আবুল হোসেন জয়ী হয়েছে দাবি করে সদর উপজেলা অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা অফিসের দরজা-জানালা ভাঙচুর করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মী, সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে পঞ্চগড় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আকতারুজ্জামান আকতার, সহসভাপতি মুরাদসহ চার নেতাকর্মী আহত হন। তাঁদের পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আকতার ও মুরাদকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ওই খবর ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মীরা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে এবং অফিসের জানালা, কাচ ও দরজা ভাঙচুর করে এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) অমল কৃষ্ণ মণ্ডল, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাকিম মো. নওশাদ, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দেওয়ান মো. সারওয়ার জাহানসহ পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।