পঞ্চগড়ে ভোট গণনায় অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ
পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে ভোট গণনায় অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ইউনিয়নের বিএনপি ও জাতীয় পার্টির দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী এই অভিযোগ করেন।
পুকুরীডাঙা নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মাঠে প্রার্থীরা যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী ইসমাইল হোসেন ও বিএনপি প্রার্থী আবু আলম মো. আবদুল হাইসহ কেন্দ্রে নিয়োজিত প্রার্থীর পোলিং এজেন্টরাও বক্তব্য দেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থী ও এজেন্টরা জানান, ভোট শেষে গণনার সময় তাদের কোনো কথা বলতে দেননি। সঠিকভাবে গণনার কথা বললে তাদের প্রশাসনের লোকজন হুমকি দেয়। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কেন্দ্র থেকে যাওয়ার সময় তাদের হাতে ফলাফলের কোনো কাগজ দেননি। কাগজ চাইলে উল্টো দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ও সরকারদলীয় লোকজন তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেন। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ও অন্যরা তাঁদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রার্থী ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘হাফিজাবাদ ইউনিয়নে আমি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। কিন্তু আমাকে হারানো হয়েছে। কেন্দ্রে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগেই এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। ফলাফল ঘোষণার পর সব প্রার্থীর এজেন্টদের ফলাফল সিট প্রদানের কথা থাকলেও নয়টি কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র দুটি কেন্দ্রের ফলাফল সিট এজেন্টকে দেওয়া হয়েছে। সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষ হয়ে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা কাজ করেছেন। আমি ভোট পুনরায় গণনার দাবি করছি।’
বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু আলম মো. আবদুল হাই বলেন, ‘নির্বাচনের দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা একটি বিশেষ দলের হয়ে কাজ করেছে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে জেতাতে তারা বিভিন্ন অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও তারা কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বলেছে, আমাদের ওপর চাপ আছে।’
আবদুল হাই আরো বলেন, ‘ব্যালট পেপার আলাদা করার সময় ধানের শীষ ও লাঙলের প্রতীকে সিল মারা ব্যালট নৌকার ব্যালটের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোটগ্রহণ শুরুর আগেই এজেন্টদের কাছ থেকে সুকৌশলে ফলাফলের সিটে সই নেওয়ার কারণে ভোট গণনা শুরুর আগেই এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়।’ তিনি ঘোষিত ফলাফল বর্জন করে সব কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনার দাবি জানান।
কানাপাড়া ঠেকরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের লাঙল প্রতীকের এজেন্ট ওমর ফারুক ও কাজলদিঘী যুগিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের লাঙল প্রতীকের এজেন্ট সুলতান আলী জানান, ব্যালট পেপার বাছাইয়ের সময় তাঁদের সেখানে থাকতে দেওয়া হলেও ফলাফল ঘোষণার আগেই তাঁদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। তাঁদের কাউকেই ফলাফলের সিট দেওয়া হয়নি।
গত সোমবার পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গোলাম মুছা কলিমুল্লাহকে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন চার হাজার ৫৮৯ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৫৭ ভোট।
সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের সমর্থিত কর্মী ও ভোটাররা উপস্থিত ছিলেন।