ঝড়ে বিধ্বস্ত স্কুল, ক্লাস চলছে গাছের নিচে

প্রবল ঝড়ে বিধ্বস্ত মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বরঙ্গাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তাই খোলা আকাশের নিচেই পাঠদান চলছে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। অথচ আর মাত্র কয়েক দিন পরই প্রথম সাময়িক পরীক্ষা। এ অবস্থায় দ্রুত বিদ্যালয়ের সংস্কারকাজ করা না হলে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে পরীক্ষা কার্যক্রম।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঝড়ে বিধ্বস্ত ভবনের সামনের আঙিনায় সারি সারি বেঞ্চে বসে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করছে। একসঙ্গে দুটি ক্লাসের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়ায় হইচই শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করছে। শিক্ষকদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্লাস নিতে।
বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী শামীম বলেছে, ‘ঝড়ে স্কুলটি ভেঙে পড়ায় আমাদের লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। গাছের নিচে বসে ক্লাস করতেও ভালো লাগে না।’
তৃতীয় শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী মার্জিয়া আক্তার জানায়, ‘বাইরে ক্লাস করতে খুবই কষ্ট হয়। এক জায়গায় বসে দুই-তিনটা ক্লাস একসাথে নেওয়ার কারণে হৈ-হুল্লোড় বেশি। পড়াশোনা করা যায় না। আমরা চাই, আমাদের স্কুলটি দ্রুত মেরামত করা হোক।’
বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক দীপালি চক্রবর্তী জানান, খোলা আকাশের নিচে লেখাপড়ার পরিবেশ থাকে না। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মনোযোগও নষ্ট হয়ে যায়। তাই শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেবা রানী বিশ্বাস বলেন, ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বরঙ্গাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। গত ৮ এপ্রিল প্রবল ঝড়ে স্কুলের একটি টিনশেড ভবন বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এর পর থেকে ১৫১ শিক্ষার্থী নিয়ে স্কুল আঙিনায় খোলা আকাশের নিচে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় চরম বেঘাত ঘটছে। তিনি বলেন, আগামী ২২ মে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা। কর্তৃপক্ষ অল্প সময়ের মধ্যে বিধ্বস্ত ভবনটি মেরামতের ব্যবস্থা না নিলে পরীক্ষা চালানো খুবই কঠিন হয়ে পড়বে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বশির উদ্দিন বাচ্চু জানান, ঝড়ে স্কুলটি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ায় লেখাপড়ার চরম ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তবে তাঁদের ট্রেনিং থাকায় এখনো বিধ্বস্ত স্কুলটি পরিদর্শন করতে পারেননি।
এ বিষয়ে সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। ট্রেনিংয়ে থাকার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলটি পরিদর্শন করা সম্ভব হয়নি। তবে দু-একদিনের মধ্যে স্কুলে যাব এবং ব্যবস্থা নেব।’