মুজাহিদের আপিলের পেপারবুক পড়া শেষ
মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে করা আপিলের পেপারবুক পড়া শেষ হয়েছে। আসামিপক্ষের এ পেপারবুক পড়া শেষে যুক্তিতর্ক শুরু করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
আজ সোমবার দুপুরে ষষ্ঠদিনের শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা পেপারবুক পড়া শেষ করেন। গত ২৯ এপ্রিল আপিলের শুনানি শুরু হয়।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চে এ-সংক্রান্ত যুক্তিতর্ক শুরু হয়। বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মোহাম্মদ মুজাহিদের মামলাটির রায়ের পেপারবুক পড়া শেষ করেছি। পেপারবুক পড়া শেষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আমরা আদালতের কাছে সময় চেয়েছিলাম। এ সময় আদালত আমাদের সময় দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষকে যুক্তিতর্ক শুরু করতে বলেন। আজ দুপুর ১টা পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আগামী রোববার পর্যন্ত মামলাটির কার্যক্রম মুলতবি করা হয়েছে।’
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং আসামিপক্ষের অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান শুনানিতে অংশ নেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং সাম্প্রদায়িক হত্যা-নির্যাতনের দায়ে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১১ আগস্ট আপিল করেন মুজাহিদ।
মুজাহিদের বিরুদ্ধে মোট সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছিল। সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। বাকি দুটি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেপ্তার হন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদ। একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের ঘটনায় ২০১১ সালের ২১ জুলাই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন কর্মকর্তারা। এরপর ২ আগস্ট তাঁকে ট্রাইব্যুনালে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত বছরের ২১ জুন মুজাহিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট সাতটি অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।
এরপর ২৬ আগস্ট শাহরিয়ার কবিরের সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এরপর এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকসহ মোট ১৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। অন্যদিকে মুজাহিদের পক্ষে প্রথম এবং একমাত্র সাফাই সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন তাঁর ছোট ছেলে আলী আহমেদ মাবরুর। গত ২২ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলে আসামিপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৫ মে দিন ধার্য করে দেন ট্রাইব্যুনাল। উভয় পক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত ৭ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত মোট চার দিবসে মুজাহিদের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ।