দেয়াল ধসে মাথায় পড়ে যুবকের মৃত্যু
নরসিংদী শহরের পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন চারতলা বিশিষ্ট নির্মাণাধীন একটি ভবনের দেয়ালের অংশবিশেষ ধসে মাথায় পড়ে জয়নাল মিয়া (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত জয়নাল মিয়া (৩০) শহরের ভেলানগর এলাকার আক্তার হোসেনের ছেলে। ভবনটির মালিক নূরুল ইসলাম দৈনিক সমকালের জেলা প্রতিনিধি। তিনি আগে বিটিভির জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করলেও কিশোরগঞ্জে চেক জালিয়াতির মামলায় এক বছরের সাজা হওয়ায় সম্প্রতি তাঁকে বিটিভি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনসিসি) অনুযায়ী, নির্মাণকাজের সময় শ্রমিকদের মাথায় হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া নির্মাণকাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নাইলনের জাল দিয়ে পুরো ভবন ঢেকে দিতে হবে। সড়ক থেকে কমপক্ষে ১ দশমিক ৫ মিটার দূরত্বের নির্মাণাধীন ভবনকে অবশ্যই ২ দশমিক ৪ মিটার বেষ্টনী দিয়ে ঘিরে দিতে হবে। কিন্তু সাংবাদিক নূরুল ইসলামের ভবনে এর কোনোটাই ছিল না।
নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম জানান, নূরুল ইসলাম নিরাপত্তা বেষ্টনী না দিয়ে তাঁর ভবনের চতুর্থ তলার দেয়ালের কাজ করছিলেন। তাঁকে বিভিন্ন সময়ে এ ব্যাপারে অবহিত করলেও তিনি কোনো কথার তোয়াক্কা করেননি। এমতাবস্থায় আজ দুপুরের দিকে জয়নাল মিয়া তাঁর নির্মাণাধীন ভবনের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ করেই চতুর্থ তলা থেকে তাঁর মাথায় দেয়ালের অংশবিশেষ ধসে পড়ে। দেয়াল ধসে পড়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে প্রত্যক্ষদর্শীরা তাঁকে ধারাধরি করে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়নালকে মৃত ঘোষণা করেন। জয়নালের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে নূরুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনের কাছে দাবি করেন, দেয়াল নয়, ভবন থেকে একটি ইট পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
ভবনের চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে নূরুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তা বেষ্টনী ছিল। তবে কম ছিল।
তবে আজ সোমবার নূরুল ইসলামের বাড়ির চারপাশে কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী বা নিরাপত্তা জাল দেখা যায়নি। নূরুল ইসলাম একটি ইট পড়ার কথা বললেও বাড়ির নিচে দুর্ঘটনাস্থলে একাধিক ইট দেখা গেছে।
দুপুরে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন জয়নালের স্বজনরা।