আমটির ওজন ৫ কেজি!
বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের বিদেশি ফল চাষ করে অনেকে সফলতা পাচ্ছেন। কেউবা শখ করে বিদেশি ফলমূল দেশে এনে চাষ শুরু করেছেন। তবে আম দেশীয় ফল। উন্নত জাতের আমের পরীক্ষামূলক চাষ করে সফলতার মুখ দেখেছে যশোরের একটি হর্টিকালচার সেন্টার। গাছে ধরেছে তিন থেকে পাঁচ কেজি ওজনের আম! বাংলাদেশে এটি শুনতে বিস্ময়কর হলেও যশোরের নতুন খয়েরতলা হর্টিকালচার সেন্টারে এমন আমের ফলন হয়েছে। গাছে ঝুলছে তিন থেকে পাঁচ কেজি ওজনের আম। সাধারণ আমের সঙ্গে এর আকৃতির ভিন্নতাও আছে। দেখতে অনেকটা বালিশের মতো।
আমটির বিশেষ গড়নের কারণে স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছে বালিশ আম। আকার-আকৃতিতে যেমন বড়, তেমনি খেতেও সুস্বাদু। দেশের সবচেয়ে বড় এ আমের জাতের নাম ব্রুনাই কিং।
হর্টিকালচার সেন্টারটিতে চার বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে এ জাতের একটি আম গাছ রোপণ করা হয়েছিল। এখন সবুজ পাতার সঙ্গে শোভা পাচ্ছে এই ব্রুনাই কিং জাতীয় আম।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালী গ্রামের নার্সারি মালিক আতিয়ার রহমানের ভাগ্নের হাত ধরে ব্রুনাইয়ের রাজকীয় বাগানের এ আমটি বাংলাদেশে এসেছে।
আতিয়ার রহমান নিজ নার্সারিতে এ আমের চারা তৈরি করেন। চার বছর আগে আতিয়ার রহমানের কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে যশোর হর্টিকারচার সেন্টারে একটি মাতৃ গাছ তৈরি করা হয়েছে। প্রথম দিকে পরিচর্যাগত কারণে ফল না এলেও এ বছর গাছটিতে প্রায় ৩৫টি আম ধরেছে।
যশোর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক দীপঙ্কর দাস বলেন, ‘চার বছর আগে এই ব্রুনাই কিং জাতের আম গাছের চারাটি রোপণ করা হয়। প্রথম দিকে পরিচর্যাগত সমস্যার কারণে ফল পাওয়া যায়নি। তবে এ বছর গাছটিতে ৩৫টি আম ধরেছে। গাছটির সব থেকে বড় আমটির ওজন প্রায় ৫ কেজি। যেটি দেশের সব থেকে বড় আম। অন্য আমের মতো একই সময়ে এ আমেরও মুকুল আসে। তবে পাকতে দেখা যায় দেরিতে এবং স্বাদে ফজলি আমের মতো।’
চাষি পর্যায়ে এ আম প্রসারে কলম তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। হর্টিকালচার সেন্টারের কর্মচারী মোহাম্মদ ওলিয়র রহমান বলেন, ‘আম গাছটি রোপণের পর থেকে আমরা কৃষিবিদদের পরামর্শ মতো পরিচর্যা করে এসেছি। এ বছর ফল ধরেছে।’
আমটি দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে দেখতে আসছেন। বালিশের মতো হওয়ায় দর্শনার্থী ও স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছেন বালিশ আম। অনেকে আবার দেখতে এসে গাছের কলম নিয়ে বাড়ি গিয়ে নিজের জমিতে রোপণ করছেন।
খুলনা থেকে আগত জুয়েল হোসেন নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ‘আমি সরকারি চাকরি করতাম। অবসরের পর থেকে বাড়িতে বিভিন্ন ফলের চারা রোপণ করছি। এখানে কিছু ফল গাছের চারা নিতে এসেছি, এসে এই জাতের আম গাছটি দেখতে পেলাম। এই আম দেখে অবাক হয়েছি। আমি এর কলম নিয়ে বাড়িতে রোপণ করব।’
চাষি পর্যায়ে এই ব্রুনাই কিং জাতের আম প্রসারে কলম তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে সৌখিন আম চাষিরা এ গাছ লাগাতে পারবেন। তবে, বাণিজ্যিকভাবে রোপণের আগে পরীক্ষামূলক রোপণের পরামর্শ কৃষিবিদদের।