ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে : শামসুজ্জামান দুদু
দেশে ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে যে কারণে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে, দেশের জনগণ এক সাগর রক্ত দিয়েছে, লাখ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছে, তাদেরকে অসম্মান করা হবে। এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে হলে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারলেই এই সংকট কেটে যাবে।’
আজ মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন দুদু।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘বেগম জিয়াকে মুক্তি দেন। তারেক রহমানকে দেশে আসতে দেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠনে সহযোগিতা করুন। পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। আর তা যদি না করেন, তাহলে যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন; সম্মান নিয়ে বিদায় নিতে পারবেন না। এটা যদি আপনার মাথায় না আসে, তাহলে অসম্মানজনক পরিস্থিতি আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।’
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এই দেশবাসী কখনও স্বৈরশাসক, কর্তৃত্ববাদী শাসকের কাছে মাথা নত করে না। পাকিস্তান আমলেও করে নাই। বাংলাদেশ আমলেও করে নাই, ভবিষ্যতেও করবে না।’
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর ভিসা নীতি এসেছে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। র্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা এসেছিল মানবাধিকারের জন্য। আমাদের পার্শ্ববর্তী বন্ধু রাষ্ট্র ভারত আমার দেশের জনগণের পক্ষে থাকলে কোনো কথা নাই। কিন্তু, দেখতে পাচ্ছি রাতের ভোটের অবৈধ সরকার শেখ হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে তারা। এটা ভালো বিষয় নয়।’
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘এমন কোনো জিনিস নাই, যার দাম সরকার তিন থেকে চার গুণ বাড়ায়নি। শুধু তাই নয়, যারা জাতিসংঘ শান্তি মিশনে আছে তাদেরকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।’
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘মানুষ আজ ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়। নিশিরাতের ভোট এ দেশের মানুষ আর চায় না। আগামীতে যদি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়া না হয়, আর যদি কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে এর দায়ভার এই আওয়ামী লীগকে নিতে হবে।’
সরকারপ্রধানের উদ্দেশে এই বিএনপিনেতা আরও বলেন, ‘নতুন করে বিদ্যুত সংকট দেখা দিয়েছে। আপনি সারের দাম বাড়িয়েছেন। আপনি ১৮ লাখ হাজার কোটি টাকা তসরুপ করেছেন। সেই টাকাগুলো দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন। আপনার দলের লোকজনের কাছে অনেক অস্ত্র আছে, এই অস্ত্রগুলা আপনি ক্লোজ করার ব্যবস্থা করেন। আপনি ১০ মিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।’
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আমাদের দাবি হলো বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাঁকে দেশে আসতে দিতে হবে। পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে। এই দেশবাসী কখনও স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষে ছিল না। এই স্বৈরাচারী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সবাইকে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হবে।’
জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বেপারির সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন তাঁতি দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনির, কৃষক দলের সহসভাপতি ইব্রাহিম, মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাদিম চৌধুরী, কর্মজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক মো. আলতাফ হোসেন সরদার, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজ প্রমুখ।