রাজধানীতে জমজমাট বিলিয়ে দেওয়া মাংসের বাজার
কোরবানির ঈদের দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জমজমাট বিলিয়ে দেওয়া মাংসের বাজার। ছিন্নমূল ও দরিদ্র লোকজন রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে কোরবানির মাংস সংগ্রহ করে তা ওই সব বাজারে বিক্রি করে দেন। যারা কোরবানি দিতে পারেননি তারা ও হোটেল ব্যবসায়ীরা মূলত এই মাংস কিনে নেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) কারওয়ান বাজার গিয়ে দেখা যায়, সংগ্রহকৃত কোরবানির মাংসের পসরা সাজিয়ে বসেছেন অনেক ছিন্নমূল মানুষ। অনেক ক্রেতা এসে ভিড় জমাচ্ছেন আশপাশে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে অনেকেই কোরবানি দিতে পারেননি। শহরের বিভিন্ন স্থানে কোরবানিকৃত গরুর মাংস, মাথা, পা ইত্যাদি সংগ্রহ করে বিক্রি করে থাকেন পশু ব্যবসায়ীরা। মূলত আর্থিকভাবে অসচ্ছল ক্রেতাদের জন্যই তাদের এ আয়োজন। সংগ্রহকৃত এসব মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকার মধ্যেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মগবাজার এলাকার রেললাইনের ওপর, গাবতলী বাজার, আজিমপুর কবরস্থানের সামনে, পলাশী বাজার, বাংলামোটর মোড়, মতিঝিল গোলচত্বর ও অন্যান্য এলাকায় গোশতের ছোট ছোট হাট বসেছে। সংগ্রহ করা কোরবানির গোশত ছিন্নমূল দরিদ্র লোকজন এখানে বিক্রি করছেন।
কোরবানি শেষে বিকেলের দিকে রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থানে চোখে পড়ে মাংসের হাট। শহরের অলিতে-গলিতে অস্থায়ী এসব বাজারে খুব কম দামে মাংস বিক্রি হচ্ছে। মূলত সকাল থেকে ভিক্ষুক এবং গরিব-অসহায় মানুষেরা বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে যে মাংস সংগ্রহ করেছেন সেটাই তারা এসব স্থানে বিক্রি করছেন। করোনার কারণে গত বছরগুলোর তুলনায় এবার মাংস কম পেয়েছেন তারা। সেটিই অস্থায়ী বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এসব বাজার থেকে নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষদের এ মাংস কিনতে দেখা গেছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের গোশত বিক্রেতা আলম মিয়া বলেন, যেসব জায়গায় কোরবানি হয়, আমরা সেখান থেকে মাংস, আস্ত পা, মাথা এসব কিনে নিয়ে আসি। পরে এখানে এনে তা বিক্রির জন্য প্রস্তুত করি। অনেকেই আছে কোরবানি দিতে পারে না বা বাজার থেকে মাংস কিনতে পারে না, তারা আমাদের এখান থেকে মাংস কেনে।
শফিক নামে আরেক মাংস ব্যবসায়ী বলেন, পরিচিত নানা জায়গা থেকে মাংস কিনে এনে আমরা এখানে বিক্রি করি। মোটামুটি কম দামে এখান থেকে কাস্টমাররা তাজা কোরবানির মাংস কিনতে পারেন। এখানে মূল মাংস বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকার মধ্যেই। ৪টা পা একত্রে বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকায়। ফ্যাপসা বা এ জাতীয় জিনিস বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকার মধ্যেই।
মাংস কিনতে আসা রিকশাচালক মো. ইসমাইল বলেন, কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য তো নাই, কিন্তু মাংস খাইতে মন চায়। তাই এখানে কিনতে আসছি। বাজারের চাইতে কম দামে এখানে পাওয়া যায়।
জসিম নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, এখানে একটু কম দামেই তাজা কোরবানির মাংস পাওয়া যায়। তাই কিনতে আসা।
অনেকে পলিথিনে ভরে মাংস নিয়ে আসছেন বিক্রির জন্য। তবে সেসব মাংসের দাম হাঁকানো হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। এমনই একজন বিক্রেতা মো. রফিক উল্লাহ বলেন, এখানে যেসব মাংস বিক্রি হচ্ছে তাতে মাংসের সাথে চর্বিও থাকে। কিন্তু আমারটা একেবারে খাঁটি মাংস। কোনো চর্বি বা হাড্ডি নাই।