পরকীয়ার অভিযোগে চাচি-ভাতিজার বিয়ে! গ্রেপ্তার ৬
বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলায় গ্রাম্য শালিসে ১০১ দোররা মেরে চাচি ও ভাতিজার বিয়ে দিয়েছেন মোড়লরা। গত ৯ জুলাই (রোববার) এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ভুক্তভোগী নারী শিবগঞ্জ থানায় আটমূল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ অভিযুক্ত ছয় জনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়।
উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের বেতগাড়ি গ্রামের মালোগাড়িপাড়ায় গিয়ে জানা যায়, গত শনিবার রাতে চাচি ও ভাতিজাকে ঘরে একসঙ্গে দেখে ভুক্তভোগী নারীর ছেলে তাঁদের সারারাত আটকে রেখে প্রতিবেশীদের ডেকে আনেন। পরের দিন ইউপি সদস্যসহ গ্রাম্য মাতব্বররা শালিসে বসেন। এ সময় ভুক্তভুগী নারীর প্রবাসী স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করা হয়। পরে মসজিদের ইমাম ১০১টি দোররা মারার নির্দেশ দিলে তাঁদের দুজনকে ১০টি বেত একত্রিত করে দোররা মারা হয়। এরপর দুই লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে তাঁদের বিয়ে পড়ানো হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করলে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে ইউপি সদস্য ও মসজিদের ইমামাসহ ছয় জনকে আটক করে।
প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ভুক্তভোগী চাচি-ভাতিজার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এবার ছেলে তাঁর মাকে হাতেনাতে ধরে ফেলায় শালিস করে তাদের দোররা মারার পর বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী নারীর ছেলের বউ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমার শাশুড়ি আমাদের বাড়িতে থাকতে দিতেন না। তাদের দুজনের মধ্যে অনেক আগে থেকেই সম্পর্ক ছিল।’
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া এক আসামির মেয়ে জানান, ভুক্তভোগী নারীর ছেলে তাঁর বাবাকে সকালে ডেকে নিয়ে গিয়ে বিচার দাবি করেন। এ সময় ভুক্তভোগীরা নিজেরাই বিয়ে করতে সম্মত হলে তাদের বিয়ে পড়ানো হয়। কিন্তু পরে থানায় গিয়ে মিথ্যা মামলা করে।
এ সময় এজাহারের কপির সত্যতা যাচায়ে ভুক্তভোগী নারী ও ছেলের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন রিসিভ করেননি।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর পরই অভিযান চালিয়ে ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও দুজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।