বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে বিএনপির কর্মসূচি : তথ্যমন্ত্রী
এক দফা দাবিতে সারাদেশেই পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে রাজনৈতিক দলটি এই কর্মসূচি করছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। একইসঙ্গে বিএনপি তাদের কর্মসূচি থেকে পরিকল্পিতভাবে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মন্ত্রী।
আজ বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল বিএনপি সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে। আমাদের দলের পক্ষ থেকেও শান্তি এবং উন্নয়ন শোভাযাত্রা করা হয়েছে। বিএনপির এই কর্মসূচিগুলোর মূল উদ্দেশ্য, দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করা, সেটি গতকাল আবার স্পষ্ট হয়েছে। তারা ৯টি জায়গায় পুলিশের সঙ্গে ও অনেক জায়গায় আমাদের দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীরা গতকাল মিরপুরে বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি রুবেল হোসেনের বাইক জ্বালিয়ে দিয়েছে। একইসঙ্গে জাতীয় পতাকা পুড়িয়েছে। খাগড়াছড়িতে তারা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক নূরুল আজমসহ বেশ কয়েকজনের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে। পৌর ভবনেও হামলা চালিয়েছে। বগুড়ায় বিনা অনুমতিতে জোর করে সাতমাথা মোড়ে যাওয়ার পথে বাধা দিতে গেলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেল ছুড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুড়তে বাধ্য হয়।’
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘লক্ষ্মীপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির নেতৃত্বে মিছিলটি সামাদ একাডেমির সামনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ব্যানার ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে। একপর্যায়ে তারা আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে আসা ১৫ থেকে ২০ নেতাকর্মীকে ধাওয়া করে। এতেই পরবর্তী সংঘর্ষ বাধে। এভাবে বিএনপি বিভিন্ন জায়গায় উসকানি দিয়ে সংঘর্ষ বাধিয়েছে।’
বিএনপি সাংঘর্ষিক রাজনীতি করে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘জ্বালাও-পোড়াও ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি থেকে তারা সরে আসেনি। গতকাল সেটি ফের প্রমাণ হয়েছে। আজকে আবার তাদের পদযাত্রা কর্মসূচি। আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। তারা সংঘর্ষ বাধিয়ে দেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। তবে, আমরা সেই সুযোগ তাদের দেব না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের উপর হামলার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থার বিভিন্ন প্রতিনিধি। বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘের এখানকার আবাসিক প্রতিনিধির টুইটকে জাতিসংঘের বিবৃতি হিসেবে প্রচার করছে সংবাদ মাধ্যমগুলো। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের টুইটকেও সংস্থাটির বিবৃতি হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। এ নিয়ে আমি খুব আশ্চর্য হয়েছি।’
আবাসিক প্রতিনিধির টুইটকে জাতিসংঘের বিবৃতি বা জাতিসংঘের বক্তব্য হিসেবে প্রচার করা কখনো সমীচীন নয় উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতিসংঘের একজন আবাসিক প্রতিনিধি একটা টুইট করল, সেটা তার প্রতিক্রিয়া, এটি জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া নয়। আমাদের গণমাধ্যমগুলো এটাকে জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া হিসেবে প্রচার করা সঠিক নয়।’
প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি তথ্যমন্ত্রী ও সরকারি দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যদি একটা টুইট করি বা ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দেই, সেটি কি সরকারের বা দলের বক্তব্য হবে? এখানকার আবাসিক প্রতিনিধির একটা টুইটকে আবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের টুইটকে তাদের পুরো প্রতিষ্ঠানের বিবৃতি হিসেবে প্রচার করা সমীচীন নয়, এটি অপসাংবাদিকতার পর্যায়ে পড়ে।’