খোকন-কাজলসহ ১৪ জনের জামিন, চারজনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর এবং আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলামসহ ১৪ জনকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে ভাঙচুরের ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকায় আইনজীবী নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, আ. কাইয়ুম ও উজ্জল হোসেনকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার (৭ আগস্ট) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
এর আগে গত ৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপির ১৮ আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলামসহ ১৮ জনকে মামলায় আসামি করা হয়। রাজধানীর শাহবাগ থানায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট মো. রফিকুল্লাহ বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
তার আগে ৩ আগস্ট দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষের সামনে আওয়ামী লীগপন্থী ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষের মুখোমুখি বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদকের (আওয়ামী লীগপন্থী) কক্ষ ভাঙচুর করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন আইনজীবী জানান, দুপুর দেড়টায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৯ বছরের দণ্ড ও তারঁর স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের তিন বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংবাদ সম্মেলন শেষে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন তারা। অন্যদিকে বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরাও সুপ্রিম কোর্টে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষের সামনে আওয়ামী লীগপন্থী ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মিছিল মুখোমুখি হয়। পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ চলাকালে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক আব্দুন নূর দুলালের কক্ষ ভাঙচুর করেন এবং তার নেমপ্লেট খুলে ফেলেন। এরপর সভাপতির কক্ষের নেমপ্লেটও খুলে ফেলা হয়।
পরে সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর দুলাল বলেন, ‘বিএনপির ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, কাজল ও সজলের নেতৃত্বে আমাদের আইনজীবীদের ওপর হামলা হয়েছে। সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর করেছে তারা।’
অন্যদিকে বিএনপির ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ সংবাদ সম্মেলন করে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা আমাদের এক নারী আইনজীবীর ওপর হামলা করেন। তাকে উদ্ধার করতে গেলে তারা আরও মারমুখী আচরণ করেন।’ সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘তারা নিজেরা ভাঙচুর করে উল্টো আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।’