হাইকোর্টের তদন্ত আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে এস আলমের আবেদন
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন বিরুদ্ধে বিদেশে ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়ে তোলার অভিযোগ তদন্তে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে। আজ সোমবার (২১ আগস্ট) সাইফুল আলম ও ফারজানা পারভীন তাদের আইনজীবীদের মাধ্যমে এই আবেদন করেন।
আদালতে এস আলম গ্রুপের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন ও আহসানুল করিম। আর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন মিন্টু কুমার মণ্ডল।
সাইফুল আলম ও ফারজানা পারভীন সিঙ্গাপুরে কমপক্ষে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন বলে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এস আলম গ্রুপ কখনওই বিদেশে বিনিয়োগ বা তহবিল স্থানান্তরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নেয়নি।
প্রতিবেদনের বিষয়টি গত ৬ আগস্ট আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। পরে, এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অর্থ পাচার ঠেকাতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
প্রতিবেদনে ওই দৈনিক পত্রিকাটি জানায়, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের বাইরে বিনিয়োগের জন্য এ পর্যন্ত ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিলেও চট্টগ্রামভিত্তিক বিশাল এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম সেই তালিকায় নেই। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত এক দশকে সিঙ্গাপুরে এস আলম অন্তত দুটি হোটেল, দুটি বাড়ি, একটি বাণিজ্যিক স্পেস এবং অন্যান্য যে সম্পদ কিনেছেন এবং সেখানেও বিভিন্ন উপায়ে কাগজপত্র থেকে তার নাম সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নথি অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশ থেকে ৪০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে বিনিয়োগের জন্য নেওয়া হয়েছে। তবে, এই পরিমাণ অর্থ ২০০৯ সালের পর সিঙ্গাপুরে এস আলমের কেবল দুটি হোটেল ও একটি বাণিজ্যিক স্পেস কেনা ৪১১ দশমিক আট মিলিয়ন মার্কিন ডলারের দশ ভাগের এক ভাগ মাত্র।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নথিতে আরও দেখা যায়, এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বৈধ উপায়ে সিঙ্গাপুরে এক লাখ সাত হাজার মার্কিন ডলার পাঠিয়েছে, যার মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানও এস আলমের মালিকানাধীন নয়।
