মাটির ঘরের দেয়াল ধসে শিশুসহ নিহত তিন
গাজীপুরে পৃথক ঘটনায় মাটির ঘরের দেয়াল ধসে শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) দিনগত মধ্যরাতে প্রবল বর্ষণে মাটির ঘরের দেয়াল ধসে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুরের রতনপুর এলাকায় মাটির ঘরের দেয়াল ধসে চাপা পড়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। অপর ঘটনায় কোনাবাড়ি এলাকায় দেয়াল চাপা পড়ে এক শিশু মারা গেছে।
কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ সফিপুরের স্বামী-স্ত্রী এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম তপন শিশু নিহতের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।
ইউএনও জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার রতনপুর নলিপাড়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে এমারত হোসেন (৬৫) ও তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (৫০) মাটির ঘরে বসবাস করতেন। গতকাল মধ্যরাতে প্রবল বর্ষণে মাটির ঘরের দেয়াল ধসে পড়লে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাপা পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। আজ শুক্রবার সকালে আশপাশের লোকজন ও তার স্বজনরা দেখতে পেয়ে তাঁদের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতদের স্বজন শরিফ আহমেদ জানান, এমারত হোসেন শফিপুর বাজারে চালের ব্যবসা করতেন। বাড়িতে বিল্ডিং টিনশেড ঘর ও পুরোনো জীর্ণ মাটির ঘর ছিল। বিল্ডিং ঘরে ছেলে তার পরিবার নিয়ে থাকেন আর মাটির ঘরে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী বসবাস করতেন। গতকাল রাতের খাবার খেয়ে যে যার মতো ঘুমাতে যাণ। রাত ১২টার দিকে শব্দ পেয়ে তাদের ছেলের ঘুম ভাঙে। ঘুম ভাঙলে বাড়িতে চোর এসেছে মনে করে গরুর গোয়াল ঘর দেখে এসে আবার ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল ৮টায় ঘুম থেকে জেগে দেখেন মাটির ঘরের পেছনে অংশ ধসে পড়েছে। পরে সেখানে চাপা পড়া অবস্থায় তার মা-বাবার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘরের পেছনের অংশ ধসে পড়ায় রাতে বিষয়টি তারা বুঝতে পারেননি।
কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর ইফতেখার হোসেন রায়হান চৌধুরী বলেন, মাটির ঘরের দেয়াল চাপায় স্বামী-স্ত্রী মারা গেছেন। স্থানীয়রা মরদেহ উদ্ধার করেছে।
কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল বাতেন বলেন, নিহত স্বামী-স্ত্রীর দাফন কাফনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
অপরদিকে কোনাবাড়ির এলাকায় ঘরের দেওয়াল ধসে এক শিশু চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম তপন ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন।
কোনাবাড়ির বাইমাইল এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন শিশু ফরিদের মা-বাবা। রাতে তাঁরা পোশাক কারখানায় কর্মরত ছিলেন আর বাসায় একা ছিল ফরিদ। রাত সাড়ে ১১টার দিকে দেয়ালচাপা পড়ে গুরুতর আহত হয় সে। পরে স্বজনরা ও এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে রাত ৩টার দিকে মারা যায় সে।