সেতু আছে, সড়ক নেই!
সেতু আছে। তা তৈরিতে ব্যয়ও কম নয়, গুনতে হয়েছে ৬৮ লাখ টাকার বেশি। আর সেই সেতুতে উঠতে হয় বাঁশের সাঁকো বেয়ে। কারণ, নেই সংযোগ সড়ক। অনেকটা অদ্ভূত মনে হতে পারে, তবে তার দেখা মিলবে লালমনিরহাট সদর উপজেলাতে। সেতুর নির্মাণ মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ মাস পেরিয়ে গেলেও হয়নি সড়ক। এমন অবস্থায় সেতুতে সংযোগ সড়ক না থাকায় চলাচলের ভোগান্তিতে পড়েছেন পাঁচ গ্রামের হাজারও মানুষ।
এলাকাবাসী বলছে, সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ইটাপোতা ছড়ার ওপর নির্মিত সেতুটি এখন যেন মরণ ফাঁদ। সেতুটি নির্মাণের বছর পার হয়ে গেলেও দুপাশে মাটি ভরাটসহ সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৬৮ লাখ ৬৮ হাজার ৭০৩ টাকা ব্যয়ে সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ইটাপোতা ছড়ার (বিল) ওপর ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থ একটি ব্রিজ নির্মাণের বরাদ্দ দেয়।
সেতুটির নির্মাণকাজ ২০২২ সালের মে মাসে শেষ হয়। ওই মাসেই সেতুটি হস্তান্তর করার চুক্তি ছিল ঠিকাদারের সঙ্গে। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় সেতুটি এখনও হস্তান্তর করেননি ঠিকাদার লিটন ইসলাম। কিন্তু ঠিকাদারকে ৮০ শতাংশ বিল দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী বাঁশ দিয়ে বানানো সাঁকো দিয়ে সেতু পার হওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। সেটিও ভেঙে গিয়ে এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। এই সেতুর ওপর দিয়ে ইটাপোতা, বনগ্রাম, ছড়ারপার, খারুয়া ও বুমকা গ্রামের মানুষ প্রায় ১৫ হাজার মানুষ চলাচল করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, তারা আগে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতেন, সেটাই তাদের জন্য ভালো ছিল। কিন্তু নির্মিত সেতুটি এখন তাদের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় সাহারা বেগম বলেন, ‘ব্রিজ হয়ে গেছে, কিন্তু দুই ধারে মাটি নেই। পানিতে ভিজে পার হতে হয়। আমাদের কষ্টের শেষ নেই। দুই ধারে মাটি দিলে আমাদের আর কোনো সমস্যা ছিল না। বাচ্চাদের নিয়ে খুব ঝুঁকিতে পারাপার করতে হচ্ছে।’
মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘উপজেলার মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে ওই সেতু সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা বয়েছে। একটু পানি শুকালেই মাটি ফেলে রাস্তার কাজ শুরু করার ব্যবস্থা করা হবে।’
লালমনিরহাট সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ‘কয়েক দফা বন্যা হওয়ায় ওই ব্রিজের পাশ থেকে মাটি ধসে গেছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জামার এন্টারপ্রাইজ ব্রিজের দুইপাশে মাটি ভরাট এবং পাইলিংয়ের ব্যবস্থা করছেন। বর্তমানে মাটি ভরাটের কাজ চলমান রয়েছে।’