সার্ক অঞ্চলে প্রাণিরোগ প্রতিরোধে একযোগে কাজ করতে হবে : প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
সার্ক অঞ্চলে প্রাণিরোগ প্রতিরোধে সার্কভুক্ত দেশগুলোকে একযোগে কাজের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। আজ মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) চিফ ভেটেরিনারি অফিসার্স ফোরামের অষ্টম সভার উদ্বোধনী অধিবেশনে এই গুরুত্বারোপ করেন তিনি। বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর দুই দিনব্যাপী এ সভার আয়োজন করেছে।
উদ্বোধনী অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে সার্ক অঞ্চলে প্রাণিস্বাস্থ্য সুরক্ষায় আঞ্চলিক ভ্যাকসিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিতে সার্ক সিভিওস ফোরামের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘বিশ্ব এখন গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। উন্নত জীবনের জন্য আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি। বর্তমান বিশ্বে ওয়ান হেলথ ধারণাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গৃহীত হয়েছে। মানবস্বাস্থ্য রক্ষায় আমরা দৃঢ়ভাবে কাজ করছি, তবে আমরা প্রাণিস্বাস্থ্যের কথা ভুলে যেতে পারি না। কারণ, মানুষ ও প্রাণী বিভিন্নভাবে একে অপরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই বাংলাদেশ সরকার ওয়ান হেলথ, বিশেষ করে মানব স্বাস্থ্যের পাশাপাশি প্রাণিস্বাস্থ্য সুরক্ষায় দৃঢ়ভাবে কাজ করছে।’
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘সার্ক সিভিও ফোরাম সার্ক অঞ্চলে ভেটেরিনারি বিষয় নিয়ে আলোচনার সর্বোচ্চ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আন্তসীমান্তীয় প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বিশেষ মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাণিস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর যেকোনো পদক্ষেপ সমগ্র বিশ্বের প্রাণী সুরক্ষায় ভূমিকা রাখবে।’
সার্ক অঞ্চলে প্রাণীর রোগ প্রতিরোধ ও ওয়ান হেলথ ধারণা বাস্তবায়নে সার্ক দেশগুলোতে অধিক গবেষণার উন্নয়ন এবং এ সংক্রান্ত বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন মন্ত্রী। পাশাপাশি এক্ষেত্রে সার্ক দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও দৃঢ় করার ওপরও জোর দেন তিনি।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘এক দেশ থেকে অন্য দেশে প্রাণীরা যাতায়াত করে। এ ছাড়া এক দেশ থেকে অপর দেশে মাংস বা অন্যান্য প্রাণিজাত খাদ্য আমদানি বা রপ্তানি হতে পারে। কোনো দেশে প্রাণী রোগ প্রতিরোধ ও প্রাণিস্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা না থাকলে, সে দেশ থেকে অন্য দেশে রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে। বিশেষ করে, যেসব খাদ্য আমরা প্রাণী থেকে পাই সেসব খাদ্য মানবদেহের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে বাংলাদেশ সরকার অন্যান্য খাতের চেয়ে প্রাণিস্বাস্থ্য সুরক্ষাকে অধিক গুরুত্ব দেয়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সরকার প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও প্রাণিচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। দেশে প্রাণিসম্পদ প্রাণিসম্পদ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিকমানের টেস্টিং ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করেছে।’
সার্ক চিফ ভেটেরিনারি অফিসার্স ফোরামের বর্তমান সভাপতি ডা. খালিদ আশফাকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অধিবেশনে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ। অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সার্ক সচিবালয়ের পরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশের চিফ ভেটেরিনারি অফিসার ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদার। অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্ক ও বিমসটেক উইংয়ের মহাপরিচালক আব্দুল মোতালেব সরকার।