লক্ষ্মীপুরে আ.লীগনেতা হত্যা মামলায় আট জনের যাবজ্জীবন
লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগনেতা ওমর ফারুককে গুলি করে হত্যার ঘটনার মামলায় আটজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ের আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলায় আরও পাঁচ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। ঘটনার পর থেকেই তারা পলাতক রয়েছেন।’
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—মো. কাউসার, সাইফুল ইসলাম, মো. সিরাজ, আলাউদ্দিন আলো, মো. আউয়াল, মো. রাজু, মো. জাকের, মো. তুহিন। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন—মো. সুমন, মো. সুজন, সজিব হোসেন, রিয়াজ প্রকাশ চিতা ও মিলন প্রকাশ মিলা।
এজাহার সূত্র জানা গেছে, ওমর ফারুক চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি একই ইউনিয়নের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করায় বিএনপির জিসানের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব হয়। ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর জিসানসহ তার লোকজন ফারুককে গুলি করে। দীর্ঘদিন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে সুস্থ হয়ে ফারুক বাড়িতে ফেরেন। এরমধ্যে জিসান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়। ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর সকালে প্রতিবেশি ইসমাইল হোসেন বাড়িতে এসে ফারুককে ডেকে নিয়ে যায়। বাড়ির কাছাকাছি একটি দোকানে বসে তারা চা পান করছিলেন। কিছুক্ষণ পরই আসামিরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে আহত অবস্থায় ফারুককে উদ্ধার করে নোয়াখালী হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন নিহতের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে নয়জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৮ জনের বিরুদ্ধে চন্দগ্রঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম হক্কানি ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরমধ্যে মামলার প্রধান আসামি মিলন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।